ছয় মাসের প্রেম পরিণতি পেতে চলেছে। আগামী ২৪ জানুয়ারি দুজনের বিয়ে।
দিনক্ষণ ঠিক হয়েছিল আগেই। কিন্তু করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ায় রাশ টানতে হলো দুই পরিবারকে। শেষ পর্যন্ত অভিনব বিয়ের আয়োজন করলো দুই পরিবার। বিয়ে হবে গুগল মিটে, আর প্রীতিভোজ অনলাইনে হোম ডেলিভারিতে।
ভারতের পূর্ব বর্ধমানের এক যুগলের বিয়ের আয়োজন এখন নেটিজেনদের আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এই বিয়ের পাত্র পূর্ব বর্ধমানের মেমারির পাল্লারোডের সন্দীপন সরকার। পাত্রী একই জেলার অদিতি দাস। রাজ্য সরকার বিয়ের অনুষ্ঠানে ২০০ জনকে হাজির থাকার অনুমতি দিলেও জাঁকজমক কমাতে চান না এই যুগল। তাই অদিতির শাঁখারী পুকুর বাড়ির কাছেই এক ক্লাবের মাঠে হবে বিয়ের অনুষ্ঠান। আর বৌভাতের আয়োজন করা হচ্ছে সন্দীপনের বাড়ির ছাদে।
তবে বিয়ের মতো এমন আনন্দের মুহূর্তে সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে। সন্দীপন জানিয়েছেন, তিনি নিজেও সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন। তাই করোনাকালে বিয়ে করতে গিয়ে বর-কনে এবং অতিথি সবারই সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে দুই পরিবার। ফলে বিয়ের অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত থাকবেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই থাকতে হবে।
সন্দীপন-অদিতির বিয়েতে নিমন্ত্রিত অতিথির সংখ্যা অনেক। তাদের জন্য বিয়ের ও বউ ভাতের ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির ব্যবস্থা করেছেন তারা। একইসঙ্গে ব্যবস্থা রয়েছে প্রীতিভোজের, যা হবে হোম ডেলিভারির মাধ্যমে। সন্দীপন জানান, হোম ডেলিভারিতে ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত শুনে পাত্রীর বাবা প্রথমে ‘পাগলের প্রলাপ’ বলে উড়িয়ে দেন। এরপর দুই পরিবারই রাজি হন।
ইতোমধ্যে গুগল মিটে বিয়ে দেখা ও ডেলিভারি সংস্থা জোম্যাটোর মাধ্যমে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কথা জানিয়ে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে অতিথিদের। বিষয়টি উল্লেখ করে বিজ্ঞাপনও দিয়েছে জোম্যাটো।
সন্দীপন-অদিতি জানান, বিয়ের দিন নিমন্ত্রিত অতিথিদের প্রত্যেকের ফোন নম্বরে গুগল মিটে বিয়ের অনুষ্ঠানের লিঙ্ক ও পাসওয়ার্ড পাঠানো হবে। যারা নতুন দম্পতির বিয়েতে অনলাইনে অংশ নেবেন ও আশীর্বাদ করবেন- তাদের বাড়িতে পৌঁছে যাবে প্রীতিভোজের খাবার।
খাবারের মধ্যে থাকবে পনির পাসিন্দা, ফিশ ফ্রাই, নান, চিকেন আচারিয়া, ভেজ আলফরাজি, পোলাও, পাবদা, সাদা ভাত , চিকেন/মটন ও মাশরুম ঝাল পেঁয়াজি। অবশ্য ইস্ট বেঙ্গল পাত্রী আর মোহনবাগান পাত্র হওয়ায় থাকছে সবুজ-মেরুন আর লাল-হলুদ দুই রকম রসগোল্লাও। এছাড়া সন্দেশ, মিষ্টি, আইসক্রিম আর পান থাকবে। আর পুরো বিয়ে নজরদারির জন্য ক্যামেরা পারসনসহ সাতজনের একটা দল তৈরি করা হয়েছে।
সন্দীপন বলেন, এভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। করোনাকালে নিমন্ত্রিতরা যে প্রত্যেকেই আসবেন, এমন নয়। তবে প্রীতিভোজের আয়োজন তো করতেই হতো। সেক্ষেত্রে খাবার নষ্ট হওয়ার সুযোগ থাকে, যেটা এখন আর হবে না। অদিতির মতে, তাদের বিয়ের আয়োজন আগামীতে আরও অনেককে পথ দেখাবে।
সূত্র: ইন্ডিয়া.কম