পার্বত্যাঞ্চলে বিলুপ্তির পথে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

পার্বত্যাঞ্চলে অবাধে বাঁশকোড়ল (চারাবাঁশ) আহরণ করে বাঁশ নিধনের কারণে বিলুপ্তি পথে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাকৃতিক মূল্যবান বাঁশ সম্পদ। তিন পার্বত্য জেলার বাজারগুলো এখন বাঁশকোড়ল ভরপুর। ব্যবসায়ীরাও বাজারগুলো থেকে বাঁশ-কোড়ল সংগ্রহ করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সবজি হিসেবে বিক্রি করছে।

প্রতিদিন বাজারগুলো প্রায় কয়েক হাজারেও বেশি বাশঁ-কোড়ল বিক্রি হচ্ছে। এতে পার্বত্যাঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ নিধন হয়ে যাচ্ছে। বিগত ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার প্রাকৃতিক পায়া বাঁশ, মূলি বাঁশ, মিতা বাঁশ, ওড়া বাঁশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান বাঁশের জন্য বিখ্যাত ছিল।

কিন্তু এই দুই-যুগ ধরে কোন প্রকার নিয়মনীতি ছাড়ায় বাঁশ কোড়ল (চারা বাঁশ) আহরণ করে সবজি খাদ্য হিসেবে ব্যবহার, অবাধে বাঁশ বাজারজাত এবং ব্যাপক হারে বাঁশ নিধন করা হচ্ছে। অপরিকল্পতিভাবে বনাঞ্চল কেটে আগুনে পুড়িয়ে তৈরিকৃত জমিতে জুমচাষের ফলে বিলুপ্তি পথে রয়েছে প্রাকৃতিক মূল্যবান এ বাঁশ সম্পদ। এই বাঁশ দিয়ে ঘরবাড়ি তৈরি, আসবাবপত্র তৈরি ইত্যাদি কাজে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তাও হারিয়ে যাচ্ছে।

পার্বত্যাঞ্চলে পাহাড়িরা সবজি হিসেবে বিভিন্ন ভাবে বাঁশ কোড়ল রান্না করে খেয়ে থাকেন এবং যেমন সুস্বাদু তেমন শরীরের জন্যও উপকারী মনে করেন। তারা বাঁশের কোড়লকে স্বাস্থ্যকর খাবার মনে করেন। বন বিভাগের মতে, জুন, জুলাই এবং আগস্ট এই তিন মাস পার্বত্যাঞ্চলে বাঁশ কর্তন বন্ধ রাখা এবং পরিবহন করার অনুমতি দেয়া হয় না। বর্ষাকালে বাঁশের বংশবৃদ্ধি হয়। যার কারণে তিন মাস বাঁশ কর্তনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

এদিকে পার্বত্যাঞ্চলে বাঁশ কোড়ল সবজি হিসেবে পাহাড়িদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। বর্ষায় খাদ্য ঘাটতি মেটাতে পাহাড়িরা বাঁশ-কোড়লকে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে আসছে যুগ যুগ ধরে। বাঁশ-কোড়ল পাহাড়িদের কাছে খুবই সুস্বাদু। ফলে বর্তমানে পাহাড়ি-বাঙালির কাছে বাঁশ-কোড়ল সবজি খাদ্যেই পরিণত হয়েছে।

পাহাড়িরা মনে করেন, পাহাড়ের জঙ্গল থেকে বাঁশ-কোড়ল সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করেন। নিজেরা খেয়ে থাকেন এবং বর্ষায় পাহাড়ে কাজকর্ম না থাকায়। তারা বিভিন্ন বন থেকে বাঁশ-কোড়ল সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি মাধ্যমে পরিবারে আর্থিক সংকট মিঠাচ্ছেন এবং তাদের ছেলে মেয়েদের পড়া লেখার খরচ বহন করে থাকেন।

পাহাড়ি সাংবাদিক শৈহ্লাচিং মার্মা বলেন, পাহাড়িদের কাছে বাঁশ-কোড়ল সুস্বাদ খাবার, তারা সবজি হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। তবে সরকারি হিসেবে এই সময়ে তিন মাসের জন্য বাশঁকোড়ল আহরণ নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্ত এখান কার পাহাড়িরা বাঁশ-কোড়ল আহরণ নিষেধাজ্ঞা এ সর্ম্পকে তাদের ধারণা নেই।

বান্দরবান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিয়া বলেন, বাঁশের যেই কোড়ল বা চারা গজায় সেটা স্থানীয়রা সেটাকে সবজি হিসাবে ব্যবহার করে থাকে। এর মাধ্যমে তাদেরকে বুঝানো হয়েছে যে বাঁশ-কোড়ল সংরক্ষণ করা জন্য। এতে তারা লাভবান হবেন এবং প্রাকৃতিক মূল্যবান এ বাঁশ সম্পদও রক্ষা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.