মিরসরাই প্রতিনিধি: মিরসরাই ট্র্যাজেডির ১০ম বর্ষপূর্তি পালিত হয়েছে। রবিবার (১১ জুলাই) সকালে স্মৃতিস্তম্ভ ‘আবেগ’ ও ‘অন্তিম’ এ ফুল দিয়ে নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাজনীতিবিদ, শিক্ষক সহ বিভিন্ন সংগঠন।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ বছর সংক্ষিপ্ত কর্মসূচী হিসেবে স্মৃতিস্তম্ভ ‘আবেগ’ ও ‘অন্তিম’ এ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি কোরখানী, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
রবিবার সকাল ১১টায় প্রথমে স্মৃতিস্তম্ভ ‘অন্তিম’ ও পরে ‘আবেগ’ এ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পক্ষ থেকে। এরপর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আইটি বিশেষজ্ঞ মাহবুব রহমান রুহেল, উপজেলা পরিষদ, উপজেলা আওয়ামী লীগ, আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়, উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতি, উপজেলা যুবলীগ, উপজেলা ছাত্রলীগ, মায়ানী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজন্ম মিরসরাই।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আইটি বিশেষজ্ঞ মাহবুব রহমান রুহেল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এম আলাউদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, সহ-সভাপতি শাখাওয়াত উল্লাহ রিপন, মিহির কান্তি নাথ, সরোয়ার উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া, মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহমদ নিজামী, মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন মাস্টার, ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল কবির ফিরোজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এসএম আবুল হোসেন, সাইফুল্লাহ দিদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ইমন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আরিফ মঈন উদ্দিন, সদস্য নুরুল গনি, আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মর্জিনা আক্তার, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাইনুর ইসলাম রানা, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল ভূঁইয়া, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাসুদ করিম রানা।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, ‘মিরসরাই ট্র্যাজিডিতে যে সকল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সব সময় তাদের পরিবারের পাশে থাকবে। মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে ট্র্যাজিডিতে নিহত কোন শিক্ষার্থীর পরিবারের যদি ঘর প্রয়োজন হয় তাহলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দেওয়া শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মাহবুব রহমান রুহেল বলেন, ‘মিরসরাই ট্র্যাজেডি পুরো বিশ^বাসীকে নাড়া দিয়েছিলো। চালকের অদক্ষতার কারণে এ দুর্ঘটনা হয়েছিলো। ১১ জুলাইকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ঘোষণার দাবী জানান তিনি।
ট্র্যাজেডি থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাল্যবিবাহ বেড়ে গেছে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা মোবাইল গেইমস ও মাদকে আশক্ত হয়ে পড়ছে। তাই অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দুরত্ব মেনে চলার অনুরোধ করেন তিনি।’
প্রসঙ্গত : ২০১১ সালের ১১ জুলাই মিরসরাই স্টেডিয়াম থেকে বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল ফাইনাল খেলা শেষে ফেরার সময় শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি পিকআপ বড়তাকিয়া-আবুতোরাব সড়কের সৈদালী এলাকায় পাশের একটি ডোবায় উল্টে যায়। যেখানে ৪৪ জন স্কুল ছাত্র সহ ৪৫ জন নিহত হন। মিরসরাই ট্র্যাজিডিতে সবচেয়ে বেশী শিক্ষার্থী নিহত হওয়া আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিস্তম্ভ ‘আবেগ’ আর দুর্ঘটনাস্থলে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিস্তম্ভ ‘অন্তিম’।