যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার এক পাদ্রির কথা জানাব আজ, বিয়ে করা আর ডিভোর্স দেয়ায় ছিল যার নেশা। একের পর এক বিয়ে করা আর ঠুনকো কারণে ডিভোর্স দেয়া ওই পাদ্রির নাম গ্লিন উলফ। যিনি বিয়ে করেছিলেন ৩১ জনকে, আর ডিভোর্স দিয়েছেন ৩০ জনকেই! এদের কারও সঙ্গে ঘর করেছেন ১৯ দিন, কারও সঙ্গে আবার টানা ১১ বছর।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বার বিয়ে করে গিনেস বুক অব রেকর্ডসে নজিরও গড়েছেন গ্লিন উলফ। তবে, তার শেষ জীবনটা খুব একটা ভালো যায়নি। তাঁর ১৯ জন সন্তান, ৪০ জন নাতি এবং ১৯ জন পুতি থাকা সত্ত্বেও তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করতে কেউই আসেননি। গ্লিনের সর্বশেষ স্ত্রী লিন্ডা জানান, তাঁর কাছে শেষকৃত্যে খরচ করার মতো পয়সা নেই। তাঁর ছেলেদের জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরাও জানান, যা বেতন পান তা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব নয়।
গ্লিন ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা। তিনি ব্লাইদ এলাকার একটি গির্জার পাদ্রি ছিলেন। কিন্তু পেশাগত কারণে নয়, তিনি নজির গড়েছিলেন অন্য কারণে। বার বার বিয়ে করেছেন, আবার বিবাহবিচ্ছেদও হয়েছে বার বার।
আরও পড়ুন: বিয়ের এক মাস আগে থেকেই কান্নার রীতি যেখানে
নয়নয় করে মোট ৩১টি বিয়ে করেছিলেন গ্লিন। ৩১ জন মহিলার মধ্যে তিন জন এমনও ছিলেন যাঁদের তিনি আগেও বিয়ে করে ডিভোর্স দিয়েছিলেন। গ্লিনের পাঁচ স্ত্রী অসুস্থতার কারণে মারা যান। ১৯২৬ সালে মার্সি ম্যাকডোনাল্ড নামের এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন গ্লিন। বিয়ের এক বছর পর মার্সি মারা যাওয়ায় তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
ক্রিস্টিন কামাচো তাঁর ২৮তম স্ত্রী ছিলেন। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ সময়ের জন্যে সংসার করেছিলেন গ্লিন। ক্রিস্টিন ও গ্লিনের বয়সের ব্যবধান ছিল ৩৭ বছর। ১১ বছর একসঙ্গে থাকার পর তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তবে গ্লেনের বিচ্ছেদের কারণগুলিও অন্যরকম। বিয়ের পর গ্লিনের টুথব্রাশ ব্যবহার করেছিলেন তাঁর এক স্ত্রী। সেই কারণে তাঁদের ডিভোর্স হয়।
স্ত্রী বিছানায় বসে সূর্যমুখীর বীজ খাচ্ছিলেন, স্রেফ এই কারণে এক স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তাঁর ৩১তম স্ত্রী ছিলেন লিন্ডা উলফ। লিন্ডার কাহিনিও ভিন্ন। তিনি ২৩ জন পুরুষকে বিয়ে করে গিনেস বুকে নজির গড়েছিলেন। অনেকের মতে, শুধু মাত্র খবরে আসার জন্য গ্লিন ও লিন্ডা বিয়ে করেছিলেন। বিয়ে করার এক সপ্তাহ পরেই লিন্ডা ইন্ডিয়ানায় ফিরে যান।
আরও পড়ুন: গুগুল মিটে বিয়ে, প্রীতিভোজ হোম ডেলিভারিতে
গ্লিন থেকে যান ক্যালিফোর্নিয়ায়। নিজের ৮৯তম জন্মদিনের ৪৫ দিন আগে মারা যান গ্লিন। গ্লিনের সঙ্গে দেখা করার জন্য ক্যালিফোর্নিয়া আসছিলেন লিন্ডা। ক্যালিফর্নিয়ায় নেমে তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। লিন্ডা জানান, তাঁদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী উদ্যাপন করতেই আসছিলেন তিনি। তার ১০ দিন আগেই মারা যান গ্লিন।
১৯৯৭ সালে ৮৮ বছর বয়সে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান গ্লিন। গ্লিনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৩৩৬ ডলার ছিল। তা দিয়েই কাউন্টির তরফে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
আনন্দবাজার অবলম্বনে