পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ পবিত্র স্থান ও মুসলিমদের কেবলা পবিত্র কাবা শরিফের দরজা উন্মুক্ত করা হয়েছে। সৌদি আরবের স্থানীয় সময় সোমবার (১৫ আগস্ট) ভোররাত ৩টার পর এটি উন্মুক্ত করা হয়। পরে বিশেষ পানি দিয়ে কাবাঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়।
সাধারণত কাবাঘর পরিষ্কারে জমজমের পানি, খাঁটি গোলাপজল এবং উন্নতমানের সুগন্ধি ‘উদ’ ও কস্তুরি ব্যবহার করা হয়। প্রথমে গোলাপের সুগন্ধিযুক্ত জমজমের পানি মেঝেতে ঢালা হয়। তারপর খালি হাতে খেজুরপাতা দিয়ে পরিষ্কার করা হয়। পরিষ্কার করার পর মেঝে ও দেয়াল কোমল সাদা কাপড় ও উন্নত মানের টিস্যু দিয়ে মোছা হয়। কাবা শরিফ ধোয়ার সময় প্রায় দুই ঘণ্টা দরজা খোলা রাখা হয়। এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সৌদি ও মাসজিদুল হারাম কর্তৃপক্ষের নিয়ম-রীতি।
সৌদি বাদশাহ সালমানের পক্ষে ক্রাউন প্রিন্স, উপ-প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান কাবা ঘর ধোয়ার কাজে নেতৃত্ব দেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, পবিত্র কাবার প্রধান ইমাম শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস, মক্কার ডেপুটি গভর্নর প্রিন্স সাউদ বিন খালিদ আল ফয়সাল, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা, বিশেষ জরুরি বাহিনীর প্রধান এবং হজ নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডার ও নিরাপত্তারক্ষীরা।
পবিত্র এ ঘরের দরজা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য বছরে (মহরম-শাবান মাসে) দুবার খোলা হয়।এছাড়া রাষ্ট্রীয় কিংবা বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ মেহমানের সৌজন্যে সৌদি সরকারের অনুমতিতে খোলা হয়।
মূলত প্রিয়নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসরণে পবিত্র কাবা শরিফ ধোয়ার মহৎ কাজটি বড় উৎসব হিসেবে পালন হয়। ৬৩০ হিজরিতে যখন রাসুল (সা.)-এর নেতৃত্বে মুসলমানরা মক্কা বিজয় করেছিল, তখন তিনি মহান আল্লাহর এ পবিত্র ঘর ধৌত করেছিলেন।
কাবাঘর ধোয়া শেষে ভেতর থেকে বের হয়ে সবাই ধারাবাহিকভাবে হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) চুম্বন করেন। এরপর পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ করেন। তাওয়াফ শেষে মাকামে ইবরাহিমে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। আবার অনেকে ধোয়ার জন্য ভেতরে প্রবেশের আগে একবার নফল তাওয়াফ ও দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে নেন।
এ সময় কাবার দরজার সঙ্গে বিশেষ সিঁড়ি লাগানো হয়। এরপর সবাই কাবাঘরের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় দুই ঘণ্টা দরজা খোলা থাকে। কাবাঘরের চারপাশে তখন বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করেন।