যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক সালমান রুশদির ওপর হামলার পর বর্তমানে তিনি ভেন্টিলেটর সাপোর্টে আছেন এবং কথা বলতে পারছেন না। শনিবার বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিতর্কিত উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ লেখার পর বহু বছর ধরে প্রাণনাশের হুমকি পেলেও শেষ পর্যন্ত গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি মঞ্চ থেকে হামলার শিকার হয়েছেন সালমান রুশদি। মঞ্চে বক্তৃতার সময় তার ওপর আক্রমণ করা হয়।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) একজন রিপোর্টার জানিয়েছেন, চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউশনের মঞ্চে বক্তৃতা করার সময় একজন দৌঁড়ে এসে সালমান রুশদিকে ঘুষি ও ছুরিকাঘাত করতে থাকে। রুশদি মেঝেতে পড়ে গেলে লোকটি ক্ষান্ত হন।
সালমান রুশদির কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু ওয়াইলি বলেছেন, সালমান রুশদির অবস্থা তেমন একটা ভালো না। তিনি এক চোখ হারাতে পারেন। তার বাহুতে থাকা স্নায়ুগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। ছুরিকাঘাতে তার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হামলার ঘটনায় নিউ জার্সির ফেয়ারভিউ থেকে হাদি মাতার (২৪) নামে এক সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিউইয়র্ক স্টেট পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি মঞ্চে উঠে হামলা চালায়।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ১৯৮৮ সাল থেকে ইরানে সালমান রুশদির উপন্যাস দ্য স্যাটানিক ভার্সেস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ঘটনার এক বছর পর ইরানের প্রয়াত নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি রুশদির মৃত্যুদণ্ডের হুকুম দিয়ে ফতোয়া জারি করেন।
সেখানে রুশদিকে হত্যা করতে পারলে ৩ মিলিয়ন ডলারের বেশি পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। ইরানের সরকার অনেক আগেই খোমেনির ওই ঘোষণা থেকে বেরিয়ে আসলেও রুশদিবিরোধী মনোভাব বজায় ছিল। ২০১২ সালে ইরানের একটি আধা-সরকারি ধর্মীয় ফাউন্ডেশন রুশদির জন্য ঘোষণা করা অর্থের পরিমাণ ২ দশমিক ৮ মিলিয়ন থেকে বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন করে।
রুশদি সে সময় ওই হুমকি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, পুরস্কারের প্রতি মানুষের আগ্রহী হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।