শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে ‘হাওয়া’

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
hawa film

আগামী শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে মেজবাউর রহমান সুমনের সিনেমা ‘হাওয়া’। গান ও ট্রেলার দিয়ে প্রায় সব শ্রেণীর দর্শকের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি করেছে সিনেমাটি। এতে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ, নাজিফা তুষি, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ। মুক্তির আগেই দর্শকের মুখে ভাসছে হাওয়া সিনেমার গান সাদা সাদা কালা কালা। প্রচারণা নিয়ে সিনেমার কলাকুশলীরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদের কথাবার্তায় আত্মবিশ্বাসের সুর। নির্মাতা জানিয়েছেন জলকেন্দ্রিক মিথ নিয়ে নির্মিত সিনেমাটির শুটিং হয়েছে গভীর সাগরে। সমুদ্রে মাছ ধরা একটা ট্রলারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে হাওয়ার প্রেক্ষাপট।

হাওয়ায় চাঁন মাঝি চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন বলেন, ‘হাওয়ার গান বা ট্রেলার নিয়ে দর্শকের মাঝে যতটুকু আগ্রহ তৈরি হয়েছে এটা বিশাল। এটা সাধারণ দর্শকই করেছেন। দর্শককে ধন্যবাদ। তারা বাংলা সিনেমাকে ভালোবাসেন। দর্শক চান সিনেমা এগিয়ে যাক। আমরাও এটাই চাই। আমরা সিনেমাটির জন্য অনেক পরিশ্রম করছি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছি।’

হলের পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকার বাইরের হলগুলোর অবস্থা ভালো না। ঢাকার দর্শকরা গদিওয়ালা চেয়ারে বসে সিনেমা দেখতে পারেন। বছরে যদি পাঁচ-দশটা ভালো সিনেমা আসে তাহলে হলের অবস্থা পাল্টে যাবে। সিনেমার সুদিন ফিরে আসবে। সিনেমা শিল্পের যে স্বর্ণালি অতীত হারিয়েছি, তা ফিরিয়ে আনতে চাই। হাওয়ার রেফারেন্স দিয়ে আমরা সিনেমার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করতে চাই। এরই মধ্যে আমাদের কিছু সিনেমা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেছে। সিনেমাগুলো সুনাম অর্জন করেছে। আমরা চাই সব সময়ের কাজগুলো যেন সেরা হয়। বিনোদনপ্রেমী দর্শকের বিনোদনের প্রথম ও প্রধান মাধ্যম সিনেমা। সিনেমাটা যেন বেঁচে থাকে।’

হাওয়া সিনেমায় নাজিফা তুষির চরিত্রের নাম গুলতি। গুলতি হাওয়া নিয়ে নাজিফা তুষি বলেন, ‘শুটিংয়ের এক বছর আগে থেকে এ প্রজেক্টের সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম। ছয় মাস রিহার্সেল করেছি। আমার পরিচালকের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। কারণ এ জার্নিতে তিনিই আমাকে প্রথম বিশ্বাস করেছেন। তিনি আমার ভেতর থেকে অভিনয় বের করে এনেছেন। হাওয়াকে আমি শিক্ষাসফর হিসেবে দেখছি। একজন শিল্পী কীভাবে অভিনয় করে, কীভাবে চরিত্রের সঙ্গে মিশে যায়, তার জীবনটা কেমন হয় সেটা শিখেছি। শুটিংয়ের আগের ছয় মাস হাওয়ার পুরো টিম চরিত্রের ভেতর বসবাস শুরু করি। সবাই সবার সঙ্গে হাওয়ার চরিত্র অনুযায়ী রিয়্যাক্ট করতাম। একটা চরিত্রকে কীভাবে কতটুকু ডিটেইল করা যায় সেটা শিখেছি আমার ডিরেক্টরের থেকে। শুধু আমি না, হাওয়ার প্রত্যেক শিল্পী তার চরিত্র নিয়ে কাজ করেছে এবং সেভাবেই জীবনযাপন করেছে। যেমন আমি ছয় মাস ধরে শাড়ি পরে ঘুরতাম। আমার চরিত্রায়নের জন্য বেদে পল্লীতে গিয়ে বহুদিন থেকেছি। তাদের সঙ্গে রান্না করেছি। শুটিংয়ে আমাদের স্ক্রিপ্টও দেয়া হয়নি। শুধু চরিত্রটা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আমরা সে চরিত্রটা হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি। অনেক কিছু শিখলাম এ সিনেমায় কাজ করে।’

অভিনেতা সুমন আনোয়ার বলেন, ‘প্রথমে আমি বলতে চাই, আমাদের দেশে সিনেমার যে প্র্যাকটিস বর্তমানে চলছে তার বাইরের একটি সিনেমা হচ্ছে হাওয়া। অন্য আর সব সিনেমাকে আপনারা যেভাবে দেখেন, হাওয়ার বেলায় তা একেবারেই ভিন্ন। কারণ আমি বাংলাদেশের দর্শকদের বলতে চাই, অনেক দিন পরে আপনারা একটা ট্রু ফিল্ম দেখতে পাবেন। ট্রু ফিল্ম বলার কারণ হলো সিনেমার গল্প, আনন্দ, স্বাদ, গন্ধ ও গবেষণা থেকে শুরু করে সবকিছু ব্যতিক্রম। মেজবাউর রহমান সুমন এ ছবির গল্প লিখতে গিয়ে প্রায় পাঁচ বছর সময় নিয়েছেন, গবেষণা করেছেন, স্ক্রিপ্ট তৈরি করেছেন। তারপর সিনেমা নির্মাণে নেমেছেন। আমরা সিনেমার চরিত্ররা প্রায় এক বছর একসঙ্গে থেকেছি। রিহার্সেল করেছি। দীর্ঘ সময় আমরা সিনেমার আবহে বসবাস করেছি। আমরা চরিত্র হয়ে তারপর শুটিংয়ে গেছি। এরপর গল্প, চরিত্র ও দৃশ্যানুযায়ী যতটা প্রয়োগ করা দরকার নিজেদের প্রয়োগ করেছি।’

সোহেল মণ্ডল বলেন, ‘হাওয়ায় আমি যুক্ত হই শেষ দিকে। পরিচালক সুমন ভাই কল দিয়ে বললেন, এমন একটা কাজ করতে চাই। তুই আমাদের সঙ্গে থাকবি কিনা? সিনেমার অন্যান্য চরিত্রের অভিনেতার নাম শুনে আমার না করার সুযোগ ছিল না। গল্প ও আমার চরিত্রটা শুনে খুবই এক্সাইটেড হয়ে যাই। চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, নাসির উদ্দিন খানসহ অন্য যারা আছে তাদের নাম শুনে আমার এক্সাইটমেন্ট আরো বেড়ে যায়। খুব আনন্দ নিয়ে কাজটা করেছি। এখন ২৯ জুলাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছি। আশা করছি দর্শক হলে এসে সিনেমাটা দেখবেন। তাহলেই পরিশ্রমটা সার্থক হবে। আমাদের খুব ভালো লাগবে।’

হাওয়ায় তার চরিত্র সম্পর্কে সোহেল বলেন, ‘হাওয়ায় আমার চরিত্রের নাম উরকেস। হাওয়া একটা নৌকার গল্প। আমি সে নৌকার সবচেয়ে ছোট মাঝি। আমি সবচেয়ে বেশি কর্মঠ, সবচেয়ে বেশি মজা করেছি। আর বলতে চাই না। এ চরিত্রের বিস্তারিত দর্শকের জন্য তোলা রইল। দর্শক ২৯ জুলাই থেকে হলে এসে সিনেমাটা দেখলে আমাদের সবার চরিত্র সম্পর্কে জানতে পারবেন।’

সাদা সাদা কালা কালা গানের শিল্পী ইরফান মৃধা শিবলু বলেন, ‘সাদা সাদা কালা কালা গানের গীতিকার ও সুরকার হলেন হাশিম মাহমুদ। টিএসসির চায়ের দোকানে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। তিনি গান করছিলেন। আমি যেহেতু ছোটবেলা থেকে গান করি, গানের প্রতি এ কৌতূহল থেকে নিজে গিয়ে পরিচিত হই। টিএসসিতেই তার অনেক গান শুনি। আস্তে আস্তে আড্ডা দিই, মিশি। অনেক সময় পার করেছি আমরা। এ গান শাহবাগ, জাদুঘর, ছবির হাট, টিএসসিতে অনেকবার গেয়েছেন তিনি। এভাবেই মেজবাউর রহমান সুমন ভাই গানটা শোনেন। গানটা অনেক আগের। সুমন ভাই হাওয়া সিনেমায় গানটি ব্যবহার করতে চাইলেন। তখন আমাদের যোগাযোগের একটা গ্যাপ হয়েছিল। সুমন ভাই বললেন হাশিম ভাইকে খুঁজে বের করো। আমরা খুঁজে বের করলাম। ততদিনে তিনি অসুস্থ। হাশিম ভাইকে দিয়েই গানটা গাওয়াতে চাইছিলেন সুমন ভাই। কিন্তু অসুস্থতার কারণে তিনি গাইতে পারছিলেন না। তার কথা ও সুর ঠিক রেখে গানটা আমি করি।’

সূত্র: বণিক বার্তা

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.