করোনাভাইরাস মহামারির এসময়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে একযোগে হাজারের ওপরে চিকিৎসকে ‘গণহারে বদলি’ অযোগ্যতার বহিঃপ্রকাশ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)।
শুক্রবার (৯ জুলাই) বিএমএ’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক দুলাল স্বাক্ষরিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে দেওয়া এক চিঠিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসকদের ‘গণহারে বদলি’কে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অস্থিরতা, বেহাল দশা ও অযোগ্যতার বহিঃপ্রকাশ। অনতিবিলম্বে এই বিতর্কিত আদেশ বাতিল করা না হলে বিএমএ এই আদেশ বাতিলের প্রয়োজনে যেকোনও কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে মন্ত্রণালয়ের ভিন্ন ভিন্ন আদেশে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ থেকে প্রায় ১ হাজার ৩শ’ চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে। এটি তাদের বিস্মিত করেছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসকদের গণবদলির আদেশ সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। এই আদেশের ফলে মন্ত্রণালয়ের অস্থিরতা, বেহালদশা ও অযোগ্যতা প্রকট আকারে বের হয়ে এসেছে।
‘যে মন্ত্রণালয় একটি সুনির্দিষ্ট ও কল্যাণকামী আদেশ করতে পারে না সেই মন্ত্রণালয় সারাদেশে কীভাবে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করবে’, এমন প্রশ্ন তুলে বিএমএ লিখেছে, উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, যখনই চিকিৎসায় মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা সব মহলে আলোচিত হয়, তখনই ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো আড়াল করার জন্য কৌশলে মন্ত্রণালয় চিকিৎসকদের ঘাড়ে সব দায়দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
আদেশে মৃত ও অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের বদলির সঙ্গে সঙ্গে যেসব চিকিৎসক দীর্ঘদিন রোগী দেখেন না তাদেরও করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বদলি করা হয়েছে জানিয়ে বিএমএ চিঠিতে লিখেছে, বেসিক সাবজেক্ট ও রক্ত পরিসঞ্চালনা বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক, তাদেরও করোনা রোগী দেখার জন্য বদলি করা হয়েছে।
বিএমএ বলছে, এমনকি দন্ত্য চিকিৎসক, নিউরো সার্জনসহ অন্যান্য বিশেষায়িত বিভাগের বিশেষজ্ঞদেরও বদলি করা হয়েছে। তারা করোনা রোগী দেখায় কীভাবে ভূমিকা রাখবে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
একইসঙ্গে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ কিংবা করোনা ল্যাবে কর্মরত চিকিৎসকদের বদলি করে দেওয়ায় আরটিপিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে বলেও জানায় বিএমএ।
আর এই আদেশের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিকিৎসকদের সুকৌশলে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে নিজেদের ব্যর্থতার দায়ভার অন্যের ঘাড়ে চাপাতে চায় বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি। চিঠিতে বিএমএ শিগগিরই এই বিতর্কিত আদেশ বাতিল করার জোর দাবি জানায়।