কেউবা সারিবদ্ধ হয়ে আবার কেউবা গোল হয়ে বসে আছেন। সবার সামনে রাখা আছে নানান পদের খাবারে সজ্জিত ইফতারি। একদল সেচ্ছাসেবক এগিয়ে দিচ্ছেন ইফতারির ছোট প্লেট-বড় প্লেট। কয়েকজন হরেক রকমের মগে শরিবত ও পানি এগিয়ে দিচ্ছেন। বলছিলাম চট্টগ্রামের নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে একসাথে হাজার মানুষের ইফতারের মহাযজ্ঞের কথা। যেখানে ধনী গরিব সব বিবেধ ভুলে সবাই সমবেত হয়েছেন সারাদিন রোজা রেখে একসাথে ইফতার করতে।
চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে প্রতিবছর রমজানের শুরুর দিন থেকে দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ ইফতার করেন। প্রতিবছরের মতো এ বছরও মসজিদে ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। রোজাদারদের জন্য সকাল থেকে বিভিন্ন ইফতারি তৈরি করেন বাবুর্চিরা। পরে বিকেল থেকে মসজিদের এক পাশে লম্বা টেবিলে থরে থরে সাজানো গামলা থেকে প্লেটে প্লেটে ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনি, মুড়ি আর জিলাপি বেড়ে রাখেন স্বেচ্ছাসেবকেরা।
বিকেল ৫টার দিকে শুরু হয় ইফতারের প্রস্তুতি। যেখানে আছরের নামাজের পর থেকেই মসজিদ প্রাঙ্গণে উপস্থিত হতে থাকেন নানা বয়সী, নানা শ্রেণীর নানা পেশার মানুষ। ২০০১ সাল থেকে এভাবেই ইফতারের আয়োজন শুরু হয় মসজিদটিতে। ২০০৮ সাল থেকে শুরু হয় বড় আকারে মক্কা-মদিনার আদলে গণ-ইফতার। এখন রোজার শুরুর দিকে দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষ এখানে নিয়মিত ইফতার করেন। রমজানের শেষ দিকে সেই সংখ্যা চার হাজারে পৌঁছায়।
প্রসঙ্গত, আন্দরকিল্লা শাহী মসজিদ চট্টগ্রামসহ তার আশপাশের মানুষের আবেগ, অনুভূতি ও ভালোবাসার মসজিদে রূপ নেয়।আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের স্থাপত্য ও গঠন মোগল রীতি অনুযায়ী তৈরি। সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৩০ ফুট উপরে ছোট্ট পাহাড়ের ওপর মসজিদটির অবস্থান। চট্টগ্রামে মুসলিম বিজয়ের স্মারকস্বরূপ কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদটি। এটির প্রতিষ্ঠাকাল ১০৭৮ হিজরি।