বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা নারী, তুরস্কের রুমেইসা গেলগির উচ্চতা ৭ ফুট ৭ ইঞ্চি এবং বিশ্বের সবচেয়ে খাটো নারী, ভারতের জ্যোতি আমগের উচ্চতা ২ ফুট ৭ ইঞ্চি।লন্ডনে বিকেলের চায়ের আড্ডায় সাক্ষাৎ হলো বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা নারী এবং সবচেয়ে খাটো নারীর। আড্ডায় দুজনে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন এবং নিজেদের পার্থক্য উদযাপন করতে গিয়ে একে অপরের মধ্যে মিল খুঁজে পেয়েছেন।
বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা নারী, তুরস্কের রুমেইসা গেলগির উচ্চতা ৭ ফুট ৭ ইঞ্চি এবং বিশ্বের সবচেয়ে খাটো নারী, ভারতের জ্যোতি আমগের উচ্চতা ২ ফুট ৭ ইঞ্চি। দুজনের মধ্যে উচ্চতার ব্যবধান ঠিক ৫ ফুট।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) লন্ডনের স্যাভয় হোটেলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ডে-এর আগে এক চায়ের আড্ডায় তাদের সাক্ষাৎ হয়। প্রতি বছর নভেম্বর মাসে রেকর্ড ভাঙার সাফল্য উদযাপন এবং নতুন রেকর্ড গড়ার জন্য উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে দিনটি পালিত দুজনের দেখা হওয়ার পর ২৭ বছর বয়সী গেলগি জ্যোতি আমগেকে বলেন, “তুমি অনেক সুন্দর।” ৩০ বছর বয়সী আমগে মুখে হাসি নিয়ে উত্তর দিলেন, “ধন্যবাদ। তুমিও সুন্দর।”
এই দুই নারীকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বইয়ের ৭০তম বার্ষিকী সংস্করণে “বিশ্ব রেকর্ড আইকন” হিসেবে সম্মানিত করা হয়েছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে রুমেইসা গেলগি বলেন, “জ্যোতির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ ছিল অসাধারণ। তিনি সবচেয়ে সুন্দর মহিলা। আমি অনেক দিন ধরে তার সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষা করছিলাম।”
গেলগি জানান, সাজসজ্জা, গহনা এবং নখ সাজানোর প্রতি দুজনেরই ভালোবাসা থেকে তাদের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধন তৈরি হয়েছে।
জ্যোতি আমগে বিবৃতিতে বলেন, “বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা নারীকে দেখে আমি অনেক খুশি।” তিনি রুমেইসাকে “ভালো মনের” মানুষ বলে অভিহিত করেন।
জ্যোতি আরও বলেন, তাদের মাঝে উচ্চতার পার্থক্য থাকায় মাঝে মাঝে একে অপরের চোখের দিকে তাকানো কঠিন ছিল।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এর প্রধান সম্পাদক ক্রেগ গ্লেনডে বলেন, “গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস পার্থক্য উদযাপনের বিষয়। এই দুই অসাধারণ, আইকনিক নারীকে একত্রিত করায় তারা নিজেদের জীবন সম্পর্কে একে অপরের সাথে এবং আমাদের সাথে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভাগাভাগি করে নিতে পারবেন।”
গেলগির অতিরিক্ত উচ্চতার কারণ উইভার সিনড্রোম। এটি একটি বিরল জেনেটিক রোগ, যার কারণে দেহের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে। এতে হাড় এবং মাংসপেশি দ্রুত বিকাশ পাওয়ায় ব্যক্তি স্বাভাবিকের চেয়ে লম্বা হয়ে যান।
গেলগি এই সিনড্রোমে আক্রান্ত ২৭তম ব্যক্তি এবং তুরস্কের ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি। হাঁটার জন্য তার কোনো কিছুর সাহায্যের প্রয়োজন হয়।
পেশায় গেলগি একজন ওয়েব ডেভেলপার। তিনি আরও কিছু রেকর্ড অর্জন করেছেন যেমন, জীবিত নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাতের আঙ্গুলের দৈর্ঘ্য, সবচেয়ে দীর্ঘ পিঠ এবং সবচেয়ে বড় কানের দৈর্ঘ্য।
ন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর রেয়ার ডিজঅর্ডারস (এনওআরডি) এর তথ্য অনুযায়ী, ওয়েভার সিনড্রোম সাধারণত ইজেডএইচ২ জিনে পরিবর্তনের কারণে হয়। তবে কিছু মানুষের মধ্যে এই সিনড্রোম থাকলেও জিনে কোনো মিউটেশন পাওয়া যায় না।
জ্যোতি আমগে “আমেরিকান হরর স্টোরি” সিরিজে মা পেটিট চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তিনি আখন্ড্রোপ্লেসিয়া নামক একটি জেনেটিক বৃদ্ধি সমস্যায় ভোগেন, যেটি গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে ঘটে।
জন হপকিন্স এর তথ্য অনুযায়ী, এই রোগের ফলে হাড়ের দৈর্ঘ্য কম হয়, হাড়ের আকার অস্বাভাবিক হয়ে যায় এবং উচ্চতাও কম থাকে। এই জেনেটিক ত্রুটি বাবা-মা থেকে সন্তানের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। তবে প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে আখন্ড্রোপ্লাসিয়া একটি স্বতঃস্ফূর্ত মিউটেশনের কারণে হয়, যা ভ্রূণের বিকাশের সময় ঘটে।হয়।