শীত মৌসুমে সকাল, সন্ধ্যা বা মাঝ রাত পর্যন্ত আমাদের দেশে ব্যাডমিন্টন খেলার প্রচলন রয়েছে। শীতকাল এলেই বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় চলে এ খেলার আয়োজন। এ ক্ষেত্রে গ্রাম বা শহরের কোনো তফাৎ নেই। যদি এই খেলার মধ্যে জুয়ার সংশ্লিষ্টতা না থাকে, তাহলে জায়েজ আছে। এবং খেলার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন সতর খোলে না যায়।
রাতের বেলায় বেশিরভাগ মানুষ ব্যাডমিন্টন খেলে। যার জন্য আলোর প্রয়োজন হয়। বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। আর এই বিদ্যুৎটা প্রায় খেলোয়াড়রা ব্যবহার করে সরকারি লাইন থেকে। কারও ব্যক্তিগত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ব্যাডমিন্টন খেলতে চাইলে অবশ্যই তার অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করা জায়েজ হবে না। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে চাইলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। ( আদ্দুররুল মুখতার : ৬/২০০) তবে কেউ যদি নিজের টাকা খরচ করে বা নিজের লাইন থেকে বাতি জ্বালিয়ে খেলে, তাহলে কোনো অসুবিধা নেই।
অনুমতি ছাড়া সরকারি বিদ্যুৎ ব্যবহার চুরির শামিল। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, চোরের ওপর আল্লাহর অভিশাপ হোক, যখন সে একটি হেলমেট চুরি করে এবং এ জন্য তার হাত কাটা হয় এবং সে একটি রশি চুরি করে এ জন্য তার হাত কাটা হয়। আমাশ (রহ.) বলেন, তারা মনে করত যে হেলমেট লোহার হতে হবে আর রশির ব্যাপারে তারা ধারণা করত তা কয়েক দিরহামের সমমূল্যের হবে। ( সহিহ বুখারি : ৬৭৮৩)
আরেক হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেন, মুমিন চুরি করার সময় ঈমানদার থাকে না। (সহিহ মুসলিম : ১০৬)
অনুমতি ছাড়া সরকারি বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হলো সরকারি হক নষ্টের অন্তর্ভুক্ত। আর অন্যের হক নষ্ট করা হারাম। অন্যের ক্ষতিসাধন ও হক নষ্টের চেষ্টাকারীদের আল্লাহ সাময়িকভাবে ছাড় দিলেও তাদের জন্য শাস্তি অবধারিত।
আল্লাহ বলেন, তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা বিচারকের কাছে পেশ করো না। (সুরা বাকারা : ১৮৮)
আবু সিরমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কারও ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহ তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাআলা তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন। (সুনানে তিরমিজি : ১৯৪০)