চট্টগ্রামকে বলা হতো ‘গেটওয়ে অব দি ইস্ট’। এখানে খ্রিষ্টীয় অষ্টম ও নবম শতাব্দীতে আরব বণিকরা আসেন ব্যবসার জন্য।
তুর্কি ও পর্তুগিজ বণিকরাও আসেন। তখন থেকেই চাক্তাইয়ের নাম ছড়িয়ে পড়ে। দু’শ বছরের ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধির ধারক সুবিশাল এই ব্যবসায়িক এলাকাটির সমৃদ্ধ অতীতের সঙ্গে বর্তমান দুর্দশাগুলো পদে পদে মিলিয়ে দেখছেন।
এসময়ে তুর্কী বণিকরা চট্টগ্রামের প্রতি অধিকতর আকৃষ্ট হন।তাদের অন্যতম ছিলেন প্রাচীন তুরস্কের অতিচৌকস, বনেদী ও ‘জাত’ ব্যবসায়ী হিসেবে খ্যাত ‘চুগতাই’ সওদাগরগণ। তাদেরই নাম ও খ্যাতির স্বর্ণযুগের সাথে জড়িয়ে চট্টগ্রামের এ ব্যবসায়-বাণিজ্যিক অঞ্চলটি ‘চাক্তাই’ হিসেবে পরিচিতি ও সুখ্যাতি লাভ করে।
চাক্তাই হলো সাগর কন্যা, কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত শতাব্দীর প্রাচীন ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। সাগর যুক্ত কর্ণফূলী নদীকে কেন্দ্র করেই সুদূর অতীত থেকে প্রাচীন আরব,পারস্য ও ইউরোপীয় বণিকগণ এতদঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আগমন করতো। আর তাতে সারা দেশের ব্যবসায়ীরা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ এলাকাকে যুক্তরাজ্যের ওয়াল স্ট্রীট এর মত বিশাল ব্যবসা বাণিজ্যের তীর্থভূমিতে পরিণত করে।
কথিত আছে, আদিকাল থেকে বিশ্বের হরেক ব্যবসায়ী, জলদস্যু কিংবা বাণিজ্যতরীবাহী নাবিকের দল চট্টগ্রামের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্যের স্বাদ আস্বাদন করে এসেছে। ভিনদেশী বাণিজ্যগোষ্ঠী, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের পদচারণায় একসময় এই এলাকাটি একটি বাণিজ্য তীর্থে পরিণত হয়েছিল।
একটা সময় ছিলো অর্থাৎ পাকিস্তান আমলে সারা বাংলাদেশের আমদানী বাণিজ্যের শতকরা প্রায় ৯০/৯৫ ভাগই খাতুনগঞ্জ-চাক্তাই এলাকা থেকে নদী পথে পরিচালিত হতো।
আগে ব্যবসায়ীদের মুখের কথায় ও মামুলি একটি চিরকুট বা সিলের উপর নির্ভর করে প্রতিদিন শত কোটি টাকার লেনদেন হতো অনায়াসেই। এখন এসবে কাজ হয় না।