আগের দিনের মত আর দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের তেমন চাহিদা নেই। যুগ পরিবর্তনের সাথে সাথে হারিয়ে যেতে বসেছে দেশীয় বাদ্যযন্ত্র ঢাক, ঢোল, করতাল, তবলা। তবে অনেক কষ্ট করে বাপ-দাদার পেশার হাল ধরে রেখেছেন বগুড়ার দুপচাচিয়া গ্রামের সুশীল দাস। তিনি জানান, জন্মের পর থেকে বাবা ঠাকুর দার কাছ থেকে এই বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করতে শিখেছেন । পরে আস্তে আস্তে এই বাদ্যযন্ত্র তৈরী করতেও শিখেছেন তারা ।
বর্তমানে এ শিল্পের অনেকাংশে ভাটা পড়তে বসেছে। তবুও কেউ কেউ যেন প্রাণের টানেই পেটের ক্ষুধা নিয়ে এই বাদ্যযন্ত্রের শৈল্পিক কারিগর হয়ে আছেন। বাপদাদার ঐতিহ্য মনে করেই তারা এই পেশাটিকে ছাড়তে নারাজ। নগরীর পাথরঘাটা সংলগ্ন সতীশ বাবু লেইনে গেলে দেখা মিলবে এমন সুদক্ষ কারিগরদের ।
নগরীর বিভিন্ন দোকানীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বছরে আশ্বিন, কার্ত্তিক এবং অগ্রাহয়ন মাসে কাজের চাপ থাকলেও বছরের অন্য সময়গুলোতে তেমন ব্যবসা হয় না। এই তিন মাস হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কীর্তন করে বেড়ায়। আর এরাই মূলত দেশীয় সংস্কৃতির বাহক বাদ্যযন্ত্রের অন্যতম ক্রেতা । এ ছাড়া বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের লোকেরা কিছু কিছু বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে ও মেরামত করে থাকেন। মাটির খোল,কাঠের ঢোল,তবলা, কাঠের ও মাটির ঢুগি ইত্যাদি নানা দেশীয় বাদ্যযন্ত্র নির্মাণ করেন এখানকার কারিগররা ।
তবে কারিগরদের মতে-গান শিখতে হাতে তৈরি দেশীয় বাদ্যযন্ত্র হারমোনিয়াম,তবলা এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা-অর্চনায় ঢাক-ঢোল ও খোলের বিকল্প বাদ্যযন্ত্র আজো আবিষ্কৃত হয়নি। দেশীয় বাদ্যযন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আধুনিকীকরণ করার দরকার বলে মনে করেন তারা । তা না হলে বাংলার ঐতিহ্য ঢাক-ঢোল,খোল,তবলা,একতারা কিংবা দো-তারা একদিন হারিয়ে যাবে।