দিল্লিতে হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া (র) এর মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে ভারত সফর শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দেশটিতে পৌঁছেই প্রধানমন্ত্রী মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ দরগাহ জেয়ারত করবেন। উপমহাদেশের মুসলমানদের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে অর্ধশতকেরও বেশি সময় ধরে পবিত্র এই দরগাটি গুরুত্বপূর্ণ।
সফরে প্রধানমন্ত্রী দরগার জিম্মাদার সৈয়দ বাসিত নিজামির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। বঙ্গবন্ধুও দরগাটি পরিদর্শন করতেন, যখন সৈয়দ বাসিতের বাবা কবির উদ্দিন নিজামি ও দাদা সৈয়দ মোহাম্মদ মিয়া নিজামি খাদিম ছিলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম উইয়ন নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
সৈয়দ বাসিত সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, আমার দাদার কাছে আসতেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান। তার মৃত্যুর পর শেখ হাসিনা আসতেন বাবার কাছে। তিনি বাবার সঙ্গে ঢাকা ও দিল্লিতে সাক্ষাৎ করেছেন। আমার বাবাকে এখনও চিনেন তিনি। এই প্রথমবার আমি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবো। আশা করি ভালো বৈঠক হবে।
আরও পড়ুন: যেভাবে ১৫ টাকার তরকারি বিক্রি হয় ৬০ টাকায়
ভারতীয় সুফি সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র হলো প্রায় ৭০০ বছর পুরনো দরগাটি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত নিয়মিত হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগায় যেতেন শেখ হাসিনা। ওই সময় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ১৯৮১ সালের ৯ এপ্রিল শেখ হাসিনা দরগাটিতে গিয়েছিলেন। ওই সময় তাকে একটি নথি দেওয়া হয়েছিল, যা ১৯৪৬ সালের ৯ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু মাজার পরিদর্শনের সময় লিখেছিলেন। এই মুহূর্তটি এখনও তিনি মনে লালন করেন।
সৈয়দ বাসিত নিজামি উল্লেখ করেছেন, তিনি যদি আসেন, একটি মনোবাসনা নিয়ে আসবেন। দাদা ও বাবার মতো আমিও তার জন্য দোয়া করবো। আমি আশা করি এখান থেকে তিনি খুশি মনে ফিরে যাবেন।
১৯৯৭ সালেও শেখ হাসিনা হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগা সফর করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দরগাটিতে এটিই তার প্রথম সফর। ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ভারতে অবস্থান করবেন তিনি। সফরে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন। আলোচনায় গুরুত্ব পাবে কানেক্টিভিটি ও পানিবণ্টন।
আরও পড়ুন: মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এল কোটি টাকার প্রাচীন স্বর্ণমুদ্রা
এবার ভারত সফরের সময় শেখ হাসিনা শুধু হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগা সফর করবেন তা নয়, রাজস্থানের আজমিরে হযরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (র) এর দরগায়ও যাবেন। ২০১০ সালে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি আজমির শরিফ গিয়েছিলেন। পরে ২০১৭ সালেও দরগাটি সফর করেছেন তিনি।
হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগার জিম্মাদার ফরিদ আহমেদ নিজামি বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা দরগায় আসবেন। তার বাবার মাধ্যমে দরগাটির সঙ্গে তার পুরনো যোগসূত্র আছে। তার বাবা এখানে আসতেন। তিনিও অতীতে এসেছেন।