সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বশেষ প্রেসেডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভ মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) রাতে মস্কোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। খবর বিবিসির।
রাশিয়ার সেন্ট্রাল ক্লিনিকাল হাসপাতাল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘গুরুতর ও দীর্ঘকালীন অসুখে ভুগে মিখাইল গর্বাচেভ আজ মারা গেলেন।’ তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বার্তা সংস্থা ইন্টারফেক্সকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গর্বাচেভের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডান লেন। তিনি বলেন, বিশ্ব একজন বিশ্বস্ত নেতাকে হারালো। তিনি আরও বলেন, সাবেক এই নেতা মুক্ত ইউরোপের দরজা খুলে দিয়েছিলেন।
শোক প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, গর্বাচেভ ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করেছিলেন। জাতিসংঘের মহাসচিব টুইটারে লিখেছেন, মিখাইল গর্বাচেভ একজন আদর্শ রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। বিশ্ব একজন শক্তিশালী বিশ্বনেতা ও শান্তির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রমকারী নেতাকে হারালো।
আরও পড়ুন: আবেগাপ্লুত প্রধানমন্ত্রী, কাছে টেনে নিলেন শেখ পরশ-তাপসকে
মিখাইল গর্বাচেভ বিশ্বে নন্দিত ও নিন্দিত দুটোই। এক সময়ের কমিউনিস্ট নেতা ছিলেন গর্বাচেভ। রাশিয়ায় দীর্ঘসময় ধরে চলা সমাজতন্ত্রের পতন হয়েছিল তার নেতৃত্বেই। ওই পতনের মধ্য দিয়ে বিশ্বে স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটেছিল। তাই সমাজতন্ত্রবাদীদের কাছে নিন্দিত গর্বাচেভ স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য নন্দিতও বটে। অনেক রুশ গর্বাচেভকে ঘৃণা করেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, পরাশক্তি থেকে রাশিয়াকে দুর্দশাগ্রস্ত দেশের কাতারে নিয়ে আসার জন্য অনেক রুশ এখনও গর্বাচেভকে ক্ষমা করতে পারেন না। সোভিয়েত পতনের পর নিজেও ক্ষমতা হারান গর্বাচেভ। এর পর পশ্চিম দেশগুলোতে বক্তৃতা দিয়েই সময় পার করতেন। ১৯৯৯ সালে স্ত্রী রাইসা গর্বাচেভের মৃত্যুতে অনেকটাই ভেঙে পড়েন তিনি।
১৯৯৬ সালে পরিবর্তিত রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন গর্বাচেভ, তবে ভোট পেয়েছিলেন মোটে ৫ শতাংশ। রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক সময় কড়া সমালোচক ছিলেন গর্বাচেভ। তবে ২০১৪ সালে পুতিনের নির্দেশে যখন ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া, তখন তার পক্ষেই ছিলেন তিনি। গত বছর গর্বাচভের ৯০তম জন্মদিনে তাকে আবার প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন পুতিন।