মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে চট্টগ্রামের ২৩টি চা বাগানে গাছেই শুকিয়ে গেছে সবুজ পাতা। টানা ১১ দিনের কর্মবিরতির কারণে উত্তোলন করা যায়নি প্রায় ৪৪ লাখ কেজি সবুজ চা পাতা। যা প্রক্রিয়াজাত করলে পাওয়া যেতো প্রায় ১০ লাখ ১১ হাজার ৫০০ কেজি চা। যার কারণে ২১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাগান মালিকরা।
শ্রমিকরা বলছে, এই ক্ষতির সম্পুর্ণ দায় বাগান মালিকদের। যত দ্রুত সম্ভব শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে সমস্যার সমাধানে মালিকদের ইতিবাচক হওয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা। সঠিক সময়ে বাগান থেকে উত্তোলন না করায় চা উৎপাদনের উপযোগীতা হারিয়েছে পাতাগুলো। এখন বাগান থেকে এসব চা পাতা তুলে ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় দেখছে না বাগান মালিকরা।
১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে চট্টগ্রামের ২১টি বাগানে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করে চা শ্রমিকরা। গত ১৩ আগস্ট সকাল থেকে তার শুরু করে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি। ২১ আগস্ট পর্যন্ত টানা ১১ দিন চলে এ কর্মসূচি।
তবে, সোমবার থেকে চট্টগ্রামের ২৩টি বাগানের মধ্যে দুটি বাগান ছাড়া ২১ বাগানের শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছে। রামগড় এবং দাঁতমারা চা বাগানের প্রায় ১২০০ শ্রমিক মঙ্গলবারও কাজে যোগ দেয়নি। ২৩টি বাগানে প্রায় ১৬ হাজার শ্রমিক কাজ করে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে আবার ঝরল রক্ত, রাঙামাটিতে দুই গ্রুপের গোলাগুলি
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা তপন দত্ত বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে চা শিল্পের যে ক্ষতি হয়েছে এর সম্পূর্ণ দায় চা বাগান মালিকদের। মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে টালবাহানা করছে চা বাগান মালিকরা। এই টালবাহানা না করলে এমন বিপর্যয় নেমে আসতো না।
প্রতি দুইবছর পর চা শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারিত হয়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২০ টাকা মজুরি নির্ধারিত হয়েছিলো। পরবর্তী দুই বছরের জন্য চা শ্রমিকদের দাবী ছিলো দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করা। কিন্তু মালিকপক্ষ ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা নির্ধারণ করবে বলে জানায়। ফলে গত ১৮ মাসে আর বাড়েনি চা শ্রমিকদের মজুরি।