বিয়ে করতে গেলে কনে পক্ষকে বখশিস দিতে হয় নতুন জামাইকে। এই বখশিস দেয়া নেয়া নিয়ে অনেক মজার কাহিনিও প্রচলিত আছে। বখশিস দাবি করা কনে পক্ষকে প্রথমে কম অফার দেয় বরের বন্ধু-আত্মীয় স্বজনরা। তারপর কনের বোন বা পাড়া প্রতিবেশির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এ নিয়ে অনেক মজাও হয় আবার কথা কাটাকাটিও হয়। কিন্তু তাই বলে মারামারি লাগানো!
এমনই ঘটনা ঘটেছে নীলফামারী জেলার ডোমারে। শুধু কথা কাটাকাটি কিংবা মারামারিতেই শেষ হয়নি এ আয়োজন, শেষমেষ জেলে যেতে হয়েছে বরকে, ভেঙে গেছে বিয়ে। এ ঘটনায় বরসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (২২ আগস্ট) বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, রোববার রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের আজিজুল ইসলামের মেয়ে লিমা আক্তারকে বিয়ে করতে আসেন জেলার জলঢাকা উপজেলার মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম। বিয়ের অনুষ্ঠানে বরের সঙ্গে বসার জায়গায় বকশিস ২০ টাকা দেওয়া-নেওয়াকে কেন্দ্র করে হট্টগোল শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে তা মারপিটে রূপ নেয়।
আরও পড়ুন: মানুষ কেন ‘প্রথম প্রেম’ ভুলতে পারে না?
আটকরা হলেন- জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল তহশিলদার পাড়া এলাকার মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে বর রবিউল ইসলাম (২৫), তার চাচা মনছুর আলী (৫৫), মনছুর আলীর দুই ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম (২৩) ও আলীমুল ইসলাম (২০) এবং রবিউলের নিকটাত্মীয় পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের সোনাহার নুল্লা পাড়া এলাকার মৃত জহুর আলীর ছেলে আল আমীন (২৮)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হরিণচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসেল রানা বলেন, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরকে মালা পরিয়ে বরণ করে নেয় কনেপক্ষ। এ সময় স্টেজে বরের সঙ্গে বসার জায়গায় বসতে বকশিস দাবি করে কনেপক্ষের লোক। বরপক্ষ ২০ টাকা বকশিস দেয়।
এত কম টাকা বকশিস দেওয়ায় কনেপক্ষ নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। বরপক্ষের লোকজন বকশিসের পরিমাণ বাড়াতে না চাইলে, দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হট্টগোল শুরু হয় এবং তা মারামারিতে রূপ নেয়। দুই পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করেও সমাধান না হওয়ায় সোমবার ভোর ৫টার দিকে পুলিশ এসে বরসহ পাঁচজনকে থানায় নিয়ে যায়।
কনের বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, বরপক্ষের লোকজন বিয়েতে এসে হট্টগোল ও মারামারি করেছে। আমাদের বাড়িতে এসে যদি তারা এ রকম আচরণ করে তাহলে তাদের বাড়িতে আমার মেয়ে গেলে তার সঙ্গে আরও খারাপ ব্যবহার করবে এবং তাকে নির্যাতন করবে বলে আমি মনে করি।
ধর্মপাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, বরপক্ষ সমঝোতা করে বিয়ে সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কনের বাবা রাজি হননি।
ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিয়েতে বর ও কনেপক্ষের মধ্যে মারামারি হলে পাঁচজনকে আটক করা হয়। বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।