চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির ভেতরে জুমার নামাজ চলাকালে পরপর দুটি মসজিদে জঙ্গি বোমা হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ৫ জঙ্গির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৭ আগস্ট) সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামের বিচারক আবদুল হালিম এ রায় দেন।
আদালত আসামি নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন (হামলার সময় প্রেষণে র্যাবে কর্মরত ছিলেন, ঘটনার পরপরই পালিয়ে যান), ঈশা খাঁ ঘাঁটির বলকিপার আবদুল মান্নান, রমজান আলী ও বাবলু রহমান ওরফে রনি এবং মান্নানের বড় ভাই আবদুল গাফফারকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাখাওয়াত পলাতক। অন্যরা রায় ঘোষণার সময় হাজির ছিলেন। পরে তাঁদের কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঈশা খাঁ ঘাঁটির ভেতরে জুমার নামাজের সময় পতেঙ্গা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর দুটি বোমা (গ্রেনেড) নিক্ষেপ করেন আবদুল মান্নান। এ সময় ভীতসন্ত্রস্ত মুসল্লিরা ছোটাছুটি শুরু করলে হামলাকারী মান্নান ভিড়ের সঙ্গে মিশে যান। কিন্তু তাঁর বাঁ হাতের কবজিতে ইলেকট্রিক সুইচ দেখে মুসল্লিরা তাঁকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তখন আবদুল মান্নান আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করে সফল হননি।
পতেঙ্গা মসজিদে হামলার ১০ মিনিট পর ঈশা খাঁ ঘাঁটির আরেকটি মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই মসজিদে জুমার নামাজ শুরু হলে রমজান আলী মসজিদের মাঝবরাবর দুটি বোমা (গ্রেনেড) নিক্ষেপ করে মুসল্লিদের সঙ্গে মিশে যান। পরে তাঁকেও ধরে ফেলা হয়। ওই দিন দুটি মসজিদে বোমা হামলায় নৌবাহিনীর কর্মকর্তাসহ ২৪ জন মুসল্লি আহত হন।
হামলার ৯ মাস পর ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর নৌবাহিনীর নেভাল প্রভোস্ট মার্শাল কমান্ডার এম আবু সাঈদ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড থানায় মামলা করেন। ঘটনার ২২ মাস পর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন আদালত।