চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ট্রেন-মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় ১৩ জনের মৃত্যুতে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট দিয়েছে। তদন্ত কমিটি বড়তকিয়া এলাকার লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে মাইক্রোবাসের ধাক্কার ঘটনায় গেটম্যান সাদ্দাম হোসেন ও মাইক্রোবাসচালক গোলাম মোস্তফার দায় পেয়েছে।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনসার আলীকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এই দুর্ঘটনার জন্য দুজনকে দায়ী করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরীর কাছে পাঁচ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি।
২৯ জুলাই বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ট্রেন পর্যটকবাহী একটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান ১১ জন। আহত হন সাতজন। এই সাতজনের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয় চিকিৎসাধীন অবস্থায়। অন্য আহত ব্যক্তিরা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হতাহত ব্যক্তিরা চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমানবাজারের পূর্ব খন্দকিয়া গ্রামের বাসিন্দা। নিহত ১৩ জনের মধ্যে মাইক্রোবাসচালক ছাড়া অন্যরা স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছিলেন। ঘটনার দিন সকালে তাঁরা মাইক্রোবাসে করে মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনায় বেড়াতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাঁরা।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আনসার আলী। তিনি বলেন, কাদের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। মাইক্রোবাসচালক গোলাম মোস্তফা দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আর গেটম্যান সাদ্দাম বর্তমানে কারাগারে আছেন।
এই ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটি করে রেলওয়ে। একটি তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয় রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরমান হোসেনকে। অপর কমিটির প্রধান রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনসার আলী।
আনসার আলীর নেতৃত্বাধীন কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও অপর কমিটি এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী। তিনি জানান, তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার জন্য গেটম্যান ও গাড়িচালককে দায়ী করেছে। গেটম্যান সাদ্দাম দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার বিষয়টি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এই ঘটনায় গেটম্যান সাদ্দামকে আগেই সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে জানিয়ে মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, এখন তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।