‘আমার আয় মাসে ৩০ হাজার, সংসার চালাতে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার। আমি কি ডাকাতি করতে যাব নাকি?’
নগরীর কর্ণফুলী মার্কেটে বাজার করতে এসে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এক ক্রেতা।
দ্রব্যমূল্যের অস্থিরতায় বেসামাল বাজার। বাজারে চাল, তেল, ডিম এবং মুরগির লাগামহীন দামে ক্ষুব্ধ নগরবাসী।
সীমাহীন বেড়েছে চালের দাম। সিদ্ধ চালের ব্যাপক চাহিদা থাকায় দামও বাড়ানো হয়েছে লাগামহীনভাবে। তিন দিন আগে মোটা ইরির ৫০ কেজির বস্তার দাম ছিল ২ হাজার টাকা। এখন সেটা বস্তাপ্রতি ৩৫০ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৩৫০ টাকায়।
বিশেষ করে বেতি কিংবা কাটারি আতপের বস্তায় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা বাড়লেও চিনিগুড়া চালের দাম বেড়েছে প্রতি বস্তায় এক হাজার টাকা করে। তিন দিন আগে কাটারি আতপ চালের ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকায়। আর চিনিগুড়া চাল পাঁচ হাজার টাকা থেকে এক লাফে হয়ে গেছে ছয় হাজার টাকা।
এক বিক্রেতা বলেন, চাউলের দাম বস্তা প্রতি ৩০০/৪০০ টাকা বেড়ে গেছে। যে চাল বস্তা বিক্রি করতাম ২৪০০ টাকা, সেটা এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ২৭০০/২৭৫০ টাকা। যেটা বিক্রি করছি ৩২০০ টাকা, সেটা এখন ৪ হাজার টাকার কাছাকাছি।
চালের আড়তের একজন কর্মী জানান, মোটা চাল যেটা আগে ২২০ থেকে ২২৫০ টাকা বিক্রি করতাম, সেটা এখন ২৫০০ থেকে ২৬০০ টাকা সর্বনিম্ন। পায়জাম চালযেটা আগে বিক্রি করতাম ২৪০০ টাকা, সেটা এখন হয়ে গেছে ২৭৫০ টাকা।
এভাবে দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে উঠেছে। মাত্র ৫ থেকে ৭ দিনের ব্যবধানে যে দাম বেড়েছে, তা অবাক হওয়ার মতোই।
অন্যদিকে ২০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে ব্রয়লার মুরগির কেজি। দামবৃদ্ধির দৌঁড়ে পিছিয়ে নেই ডিমও। খুচরায় প্রতিহালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। ক্রেতাদের দিশেহারা অবস্থা।
বাজারে মুরগি কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, আমাদের খাদ্য তালিকায় প্রধান খাবার ব্রয়লার মুরগি। এখন সেটাও বাদ যাচ্ছে। মহররমে মুরগি কিনেছি ১৭০ টাকায়। আজকে সেটা কিনতে হচ্ছে ২১০ টাকায়। আর দেশি মুরগি তো সাধ্যের বাইরে।
দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকার চাল আমদানির অনুমতি, শুল্ক কমিয়েছে, বাজারে অভিযানসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তবে তাতে খুব বেশি সুফল মেলেনি। সরকার অক্টোবরের মধ্যে ১০ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি দিলেও এখন পর্যন্ত চাল এসেছে মাত্র ৩৫ হাজার মেট্রিক টন।