বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে ৩১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিল ছেলেরা, গ্রেপ্তার ২

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

পিতা-মাতার কাছে সন্তান আর সন্তানের কাছে পিতা-মাতার চেয়ে আপন কেউ নেই আর। জন্মদাতা বাবা সারাবছর বহু কষ্ট, ত্যাগ স্বীকার করে মানুষ করার চেষ্টা করেন সন্তানদের। কিন্তু কোনো সন্তান আর ‘মানুষ’ হয়ে উঠতে পারে না। তেমনই তিন সন্তানের হতভাগ্য পিতা জয়নাল আবেদীন। বয়স তার ৭০ এর কোঠায়। সারাজীবন নিজে না খেয়ে সন্তানদের খাইয়েছেন। শত কষ্টের মধ্যেও তাদের ভালো রাখার চেষ্টা করেছেন।

আর সেই সন্তানরাই ছিনতাইকারী সেজে নিজের বাবাকে পিটিয়ে জখম করে ছিনিয়ে নেয় ৩১ লাখ টাকা। নিজের জমানো সব সঞ্চয়, জমি-জমা দিয়েও জয়নাল আবেদীন সন্তুষ্ট করতে পারেননি তার সন্তানদের। স্ত্রী আর মেয়ের জন্য রাখা জমি না ছেলেদের নামে লিখে না দেয়ায় জঘন্যতম এ কাণ্ড ঘটায় তিনি ছেলে হানিফ, হান্নান ও মান্নান।

রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকার মানিকদীতে তিন ছেলের মারধরে ওই বৃদ্ধ এখন ঠিকমতো হাঁটতেও পারছেন না। তবে, শেষ পর্যন্ত পুলিশের দ্বারস্থ হন জয়নাল, তার করা মামলায় তিন ছেলের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জানা যায়, ছেলেরা অত্যাচার করে বিধায় বৃদ্ধ জয়নাল আবেদীন স্ত্রী হনুফাকে নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পশ্চিম মানিকদীর একটি ভবনে মেয়ের পরিবারের সঙ্গে ভাড়া থাকেন। নিজের সম্পত্তির অধিকাংশই দিয়েছেন তিন ছেলের নামে। স্ত্রী আর মেয়ের কথা ভেবে মানিকদী এলাকার আড়াই কাঠা জমি ছেলেদের দেননি। তাই তাদের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতেন তিন ছেলে।

পরে ওই জমি বিক্রি করে টাকা জমিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন জয়নাল। জমি বিক্রি করে রেজিস্ট্রি অফিস থেকে বাসায় ফেরার সময় ছিনতাইকারীর বেশে জয়নালের ওপর হামলা চালায় তিন ছেলে। লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে নির্মমভাবে জখম করেন বাবাকে।

জয়নাল আবেদীন বলেন, জমি বিক্রি করে ৩১ লাখ টাকা নিয়ে বাসায় ঢোকার সময়ই হামলা করা হয়। আমার তিন ছেলে আর তাদের এক সহকর্মীকে নিয়ে চারজন মিলে মেরে আমার পা আর মাথা জখম করে দেয়। প্রায় এক বিঘার মতো জমি ছিল। সন্তানদের লালন-পালন করতে করতে পরে যা ছিল তার প্রায় সবই ছেলেদের দিয়েছি। এমন সন্তান থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো।

ঘটনার পর কয়েকদিন হাসপাতালে থেকে থানায় গিয়ে মামলা করেন জয়নাল দম্পতি। এরপর থেকেই গা ঢাকা দেন ছেলেরা। তাদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ধর্ণা দিতে থাকেন নির্যাতিত বাবা। ঢাকার ডিবি পুলিশের কাছে এমন তথ্য আসার পর টাঙ্গাইল ও গাজীপুরে পালিয়ে থাকা দুই ছেলে হান্নান ও মান্নানকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দারা।

কিন্তু এখনো পলাতক প্রধান আসামি বড় ছেলে হানিফ। দুই ছেলেকে আটকের পর বাবার কাছ থেকে ছিনতাই করা ৩১ লাখের মধ্যে ২৯ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাবা-মার প্রতি সন্তানদের এমন আচরণ দেখে হতবাক কর্মকর্তারা।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.