কিছুই না করে যদি মাসে মাসে টাকা পাওয়া যায়, তাহলে আর কষ্ট করে টাকা ইনকাম করা কেন? তার চেয়ে ঢের ভালো জাপানের নাগরিক শোজি মোরিমোতোকে অনুসরণ করা। শোজি’র বয়স ৩৯ বছর। বিশ্বজুড়ে শোজি পরিচিত কিছু না করার জন্য। শুনতে অদ্ভুত হলেও শোজি কিছুই করেন না। কিন্তু এ জন্য মোটা অঙ্কের মজুরি পান তিনি। শোজি বলেন, আমার পেশা হলো খাওয়া ও পান করা, সামান্য প্রতিক্রিয়া জানানো, এর বেশিকিছু নয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে আয়শোজি বেশ জনপ্রিয়। ২০১৮ সালে তিনি টুইটারে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। এরই মধ্যে টুইটারে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা আড়াই লাখের বেশি।
জাপানের মানুষের জীবনযাত্রা আমাদের দেশের মতো নয়। সেখানে নিঃসঙ্গ মানুষের সংখ্যা অনেক। সে নিঃসঙ্গ মানুষকে সঙ্গ দেয়ার অদ্ভুত কাজই করেন শোজি। নিঃসঙ্গ ব্যক্তিরাই তাঁর সেবা গ্রহীতা। শোজি তাঁর সেবা গ্রাহকদের সঙ্গ দেন। তাঁদের সঙ্গে সময় কাটান। কিন্তু এর বেশি কিছু করেন না। এমনকি গ্রাহকের সঙ্গে আগ বাড়িয়ে কথা বলতেও তাঁর আপত্তি। শুধু পাশে বসে গ্রাহকদের সঙ্গ দেওয়াই তাঁর কাজ।
আরও পড়ুন: ছাত্রকে বিয়ে করা কলেজ শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার, স্বামী আটক
কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে অল্প কথায় উত্তর দেন। কফি খাওয়ালে একসঙ্গে বসে পান করেন। শপিং করেন, রেঁস্তোরায় যান, ভ্রমণ করেন; কিন্তু কাজের সময় শোজি একেবারে নিশ্চুপ থাকেন। এমনকি তাঁকে সঙ্গে নিয়ে কেউ নিজের জন্মদিন উদ্যাপন করতে পারেন, কেক কাটতে পারেন। সেক্ষেত্রেও শোজি নিশ্চুপ সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত থাকেন।
শোজি নিজের এমন বিচিত্র কাজের নাম দিয়েছেন ‘কিছুই না করা’। এর জন্য মজুরি নেন তিনি। সংবাদমাধ্যমকে শোজি জানান, এখন পর্যন্ত তিনি তিন হাজারের বেশি মানুষকে সেবা দেওয়ার অনুরোধ পেয়েছেন। একদিনে তিনজন গ্রাহককে সেবা দিয়েছেন তিনি। প্রতিজনের জন্য তাঁর মজুরি ৬৯ পাউন্ড।
পরিবারের সদস্য ও বন্ধুরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজ করতে বলতেন। কিন্তু শোজি কিছুই করতেন না। এভাবেই সময় কেটে যাচ্ছিল তাঁর। হঠাৎ ভাবলেন, এই অভ্যাস পেশায় বদলে ফেললে মন্দ হয় না। সেই ভাবনা থেকেই টুইটারে সক্রিয় হন তিনি। নিঃসঙ্গ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেওয়ার কাজ নেন। কিন্তু নিজের চুপচাপ থাকার অভ্যাস বদলাননি।
আপনিও যদি শোজি’র মতো কিছুই করতে না চান, তবে এখনই কাজে নেমে পড়ুন!