পেট্রোলবামা বাহিনী দেখলে আমরা বসে থাকব না, প্রতিরোধ গড়ে তুলব: তথ্যমন্ত্রী

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীরা আবার মাঠে নেমেছে। তাদের তাড়িয়ে দিতে হবে এবং প্রতিরোধ করতে হবে। বিএনপির সমাবেশে আমরা কখনো বাধা দিইনি, দেবও না। কিন্তু নিজেরা যখন মারামারি করে তখনতো অন্যকারো বাধা দিতে হয় না। যদি পেট্রোলবামা বাহিনীদের দেখি তখন কিন্তু আমরা বসে থাকব না, আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব।

তিনি বলেন, বর্ষাকালে যখন বৃষ্টি হয় পুকুরে পুঁটি মাছ খুব লাফায়, পুঁটি মাছের সাথে মলা মাছও খুব লাফায়। এখন বিএনপির লাফালাফি হচ্ছে পুঁটি আর মলা মাছের লাফানির মত। তেলের দাম বাড়াতে ওরা একটু লাফাচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার পর সমগ্র পৃথিবীতে তেলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ৬০ ডলারের তেল ১৭০ ডলারে গিয়েছে। এখন সেটি ১৩৮/৪০ ডলার। দ্বিগুণের চেয়ে বেশি।

আমাদের দেশে আমরা তেলের দাম দ্বিগুণ করি নাই। সবমিলিয়ে ৩৮/৪০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আমরা বাড়িয়ে পশ্চিমবাংলার সমান করেছি। বিশ্ববাজারে যদি তেলের দাম স্থিতিশীলভাবে কমে তাহলে আবার তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। তাই বিএনপির এই পুঁটি ও মলা মাছের মত এত লাফালাফির কোন প্রয়োজন নেই।

শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার এডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার অডিটোরিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার ও যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সহসভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদার।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা একজন রাষ্ট্রপতি বা রাষ্ট্র নায়ককে হত্যা, তা নয়। এদেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। আর সেই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব ছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ফজরের আলো ফোটার আগে যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সংবাদ জিয়াউর রহমানের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়, তখন সেই ভোরবেলা সুটেট-বুটেট অবস্থায় থাকা জিয়ার স্বাভাবিক জবাব ছিল, কি হয়েছে তাতে, উপরাষ্ট্রপতিতো আছে! তখন তিনি পোশাক পড়ে তৈরি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের খবরের অপেক্ষায়।

তিনি বলেন, কর্নেল ফারুখ ও রশিদ ১৯৭৬ সালে লন্ডনে একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকাণ্ড নিয়ে তারা বিভিন্ন সময়ে জিয়াউর রহমানের সাথে আলোচনা করেছেন। জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতা দখল করে তখন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে যে তার সংশ্লিষ্টতা, সেই যে অন্যতম কুশীলব ছিল তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সমস্ত প্রমাণ করেছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিভিন্ন দুতাবাসে চাকরি দিয়েছিল, তাদের বিদেশে চলে যাবার সুযোগ করে দিয়েছিল।

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সেবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হচ্ছে জিয়াউর রহমান এবং তার পরিবার উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রসিডিং সংরক্ষিত আছে, সেই মামলার প্রসিডিংয়ে আসামী এবং সাক্ষিরা তাদের জবানবন্দিতে সবিস্তারে বলেছেন কখন কোথায় কিভাবে জিয়াউর রহমানের সাথে দেখা করেছিল, তিনি কিভাবে ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত ছিল। এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর মেজর জেনারেল সফি উল্লাহকে সরিয়ে দিয়ে জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনী প্রধান করেন খোন্দকার মোস্তাক। খোন্দকার মোস্তাকের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহচর নাহলে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের অন্যতম কুশীলব নাহলে জিয়াউর রহমানকে কেন সেনাবাহিনী প্রধান করা হয় প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কয়দিন আগে বিএনপির নেতৃত্বে সমাবেশ হয়েছিল নয়াপল্টনে। সেখানে এই রাজনীতির কাকেরা যেভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের দলের সাধারন সম্পাদক সম্পর্কে কথা বললেন, সেই ধরণের কথা আমাদের রুচিতে বাঁধে। কিন্তু আমি যদি বলি তাদের নেতানেত্রীরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারবেন না।

ড, হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৭১ সালে কারো বাড়িতে যদি কোন মুক্তিযোদ্ধা একগ্লাস পানি খেয়েছে, সেই খবর যদি পাকিস্তানি আর্মি কিংবা রাজাকারররা পেয়েছে, সেই বাড়িতে লুট হয়েছে, অথবা জ্বালিয়ে দিয়েছে, নইলে কোন যুবক ছেলে থাকলে ধরে নিয়ে গিয়েছে। দেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছে, জিয়াউর রহমান রণাঙ্গনে, আর বেগম খালেদা জিয়া পাকিস্তানিদের ক্যান্টনমেন্টে আরাম আয়েশে থাকে। ভেতরের বিষয়টা কি ? আমি লজ্জায় এটা বলতে পারব না।

কাগজে দেখলাম বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলেছেন সরকার নাকি কোন সমাবেশে বাধা দিচ্ছে না বিদেশীদের চাপে। এ প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের নেত্রী কদিন আগে বলেছেন আমরা বিএনপির কোন সমাবেশে বাধা দিব না এবং আমরা কোন বাধা দিইনি। কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম গতকাল তারা নিজেরাই মারামারি করে নিজেদের সমাবেশ পণ্ড করে দিয়েছে। সমাবেশ ডাকলে যারা নিজেরাই চেয়ার ছোঁড়াছুড়ি করে, নিজেরা মারামারি করে সমাবেশ পণ্ড করেন, সেখানে বাধাতো আমাদের দেয়ার দরকার নাই। ভবিষ্যতেও দেখবেন যখনই বিএনপি সমাবেশ ডাকবেন তখনই নিজেরা সমাবেশ ডেকে নিজেরা সমাবেশ পণ্ড করে দিবে।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা স্বজন কুমার তালুকদার, আবুল কাশেম চিশতি, জহির আহমদ চৌধুরী, মো. শাহজাহান সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ইদ্রিচ আজগর, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, আকতার হোসেন খান, জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার, আবু তাহের, এমরুল করিম রাশেদ, শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.