কক্সবাজারে খুলে দেয়া হলো পর্যটন হোটেল-মোটেল

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই খুলে দেয়া হলো কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউজ।

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) থেকে ৫০% কক্ষ বুকিংসহ শর্ত সাপেক্ষে হোটেল মোটেল খোলার অনুমতি দেন প্রশাসন।

এর আগে সোমবার (২১ জুন) জেলা প্রশাসনের সভা থেকে এ ঘোষণাটি আসে। তবে বন্ধ থাকবে সমুদ্র সৈকতসহ পর্যটন স্পটগুলো।

বুধবার (২৩ জুন) বিকেলে সরেজমিন হোটেল মোটেল জোন ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন আসবাবপত্র ধুয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে। সাজানো হচ্ছে রিসিপশন। তবে বেশিরভাগ হোটেল, কটেজ খোলার লক্ষণ চোখে পড়েনি।

এ বিষয়ে কারণ অনুসন্ধানে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের অসন্তুষ্টির কথা বেরিয়ে এসেছে। সমুদ্রসৈকত বন্ধ রেখে শুধু আবাসিক হোটেল খোলা রাখার সিদ্ধান্তকে মানতে নারাজ কর্মরতরা। তারা বলছেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রেখে শুধু হোটেল খোলা রেখে লাভ কী? খালি হোটেলে কেউ কী ঘুমাতে আসবে?

এদিকে কক্সবাজারে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো খুলে দেয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছিল স্থানীয় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। অবশেষে তাদের দাবি, জীবন জীবিকা ও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে হোটেল-মোটেল খোলার অনুমতি আসে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

হোটেল আমারি রিসোর্টের ম্যানেজার মু. মনজুর আলম বলেন, সাগর পাড়সহ বিনোদন কেন্দ্রগুলো যদি খুলে দেয়া না হয় তাহলে তো এখানে পর্যটক আসবে না। পর্যটক না আসলে হোটেল খোলা-না খোলা সমান।

ওয়েলপার্ক রিসোর্টের ম্যানেজার আরিফুল্লাহ বলেন, ২৪ তারিখ থেকে হোটেল খুলবে শুনেছি। তাতে লাভ কী? সব পর্যটন স্পট বন্ধ। হোটেল খোলে কী হবে? আমরা যেভাবে আছি সেভাবেই থাকব।

জিয়া গেস্ট ইনের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন জানালেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ২৪ জুন থেকে হোটেল খোলার বিষয়ে একটি নির্দেশনা পেয়েছি। তার আলোকে প্রস্তুতি চলছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরবে। এর আগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজগুলো সেরে নিচ্ছি।

তিনি আর বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা হোটেল পরিচালনা করব। মাস্ক, স্যানিটাইজারসহ প্রয়োজনীয় সব কিছুই আমরা রেখেছি।

এদিকে হোটেল মোটেল খোলার সিদ্ধান্তে সচেতন মহলসহ অনেকের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াও লক্ষ্য করা গেছে। তাদের দাবী করোনার ঊর্ধ্বগতিতে হোটেল মোটেল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। এতে করোনা সংক্রমণের হার আরও বাড়তে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সচেতন নাগরিক জানিয়েছেন, সারাদেশে করোনা সংক্রমণ আশংকাজনক। হোটেল মোটেল খুলে দেয়ার কারণে কক্সবাজারেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আমিন আল পারভেজ বলেন, পর্যটন সংশ্লিষ্ট মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহের দাবির প্রেক্ষিতে শর্তসাপেক্ষে হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউজ খুলে দেয়া হয়েছে। তবে পর্যটন কেন্দ্রগুলো যথারীতি বন্ধ থাকবে।

তিনি আরও বলেন, হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষকে কিছু শর্ত বেধে দেয়া হয়েছে। সেসব পালনে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে গৃহীত শর্তগুলো হলো, বেড়ানোর উদ্দেশ্যে কোন পর্যটক রুম বুকিং নিতে পারবে না। মাত্র ৫০% কক্ষ বুকিং দেয়া যাবে। রুম সার্ভিস ব্যতীত বন্ধ থাকবে রেস্টুরেন্ট।

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে কক্ষ ভাড়া দেয়া যাবে না। বন্ধ থাকবে সুইমিংপুল। হোটেলের প্রবেশ-মুখে জীবাণুনাশক স্প্রে ও তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে। লবিসহ সকল কক্ষে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া পুরো হোটেলে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। শর্ত ভাঙলে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

এ অবস্থায় কক্সবাজারে বিমান পরিবহণ চালু করা এবং সীমিত পরিসরে আবাসিক হোটেল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা করেন এমন একজন গবেষক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গবেষক বলেন, সার্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে কক্সবাজার জেলার করোনা সংক্রামণ প্রতিরোধে এই ধরণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে সভা সমাবেশ ও সেমিনারের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.