চট্টগ্রামে করোনার প্রভাবে ব্যস্ততা নেই কামার পাড়ায়

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের নগর কিংবা উপজেলায় কোথাও ব্যস্ততা বাড়েনি কামারপাড়া গুলোতে। পবিত্র কোরবানি এলে কামরারা দা,ছুরি, বিভিন্ন লৌহা জাতীয় জিনিস তৈরিতে রাত-দিন ব্যস্ত সময় পার করেন। কিন্তু হাতুড়ি পেটানো টুংটাং শব্দে এখন আর মুখর নেই কামাড়পাড়ায়।

ব্যবসা ও ব্যস্ততা দুটোই কমে গেছে। কামার পল্লীতে নেই তেমন সাড়া শব্দ। সকল ব্যবসায়ীরা যেন ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে সময় পার করছে।

সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরের জেলখানা রোড, বহদ্দারহাট কামারগলি, চকবাজার, মুরাদপুর, কোতোয়ালী, পাথরঘাটা অপরদিকে উপজেলার কর্ণফুলী,আনোয়ারা, বাঁশখালী,চন্দনাইশ,সাতকানিয়া, লোহাগড়া, সহ বিভিন্ন এলাকার কামারের দোকানগুলোতে আগের মতো ব্যস্ততা নেই কামারদের।

বিভিন্ন হাট বাজারে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দা, চাবুক, বটি, ধামাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বানাচ্ছেন কামাররা।

কোরবানকে সামনে রেখে স্থানীয় বাজার থেকে লোহা কিনে সেগুলো আগুনে পুড়ে দা, চাবুক, বটি, ধামাসহ বিভিন্ন জিনিস পত্র তৈরি করে পশরা সাজিয়েছে কামাররা। কিন্তু এসব ব্যবহার্য জিনিস চাহিদা মতো কেনার লোক সমাগমের উপস্থিতি এখনো কম।

করোনার প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে এ শিল্প জমে ওঠার কথা। হয়তো আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। কামারদের আরেকটি অংশ তৈরি করেন দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি ও কুড়াল। এগুলো মূলত কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়।

কর্ণফুলীর দৌলতপুরের কামার স্বপন দাশ বলেন, ৩০ বছর ধরে এই পেশায় আছি। প্রতি বছরই এসময়টায় অনেক ব্যস্ত থাকি। দিন যত গড়াবে ব্যস্ততা বাড়বে। এসময় প্রতিদিন খুব সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করি। চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। ঈদের আগের দিনে অনেক অর্ডার ফেরত দিতে হয়। কোরবানির ঈদের আগের ১ সপ্তাহ দোকান ভেদে ভাল আয় হয়। ঈদের আগের রাত পর্যন্ত কাজ করে ঈদের দিন সকালে গ্রামের বাড়ি যায়। কিন্তু এখন করোনা সব থামিয়ে দিয়েছে।

একজন কামার এখন দৈনিক ৭০০-৮০০ টাকা মজুরি পান। এছাড়া চা-পান, নাশতা পেয়ে থাকেন তারা। কর্ণফুলী উপজেলার দৌলতপুরের কামার শুভনের কথায়, ‘ছয়-সাত মাস খুব খারাপ অবস্থায় ছিলাম। আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে কোনোরকম চলেছি। সামনে ইদ বলে টুকটাক কিছু কাজ পাচ্ছি এখন। তবে আগের মতো বেশি হবে না জানি। করোনায় মানুষজন বের হয় কম।’

অন্যদিকে, আনোয়ারার চাতুরী চৌমুহনীর কামার স্বপন জানান, দু’বছর আগেও সারা রাত-দিন কুরবানির ঈদে, দা, ছুড়ি, বটি তৈরি, শানকাজে ব্যস্ত সময় পাড় করতাম। দিনে আয় হতো ৪/৫ হাজার টাকা। আর এখন করোনা ভাইরাসের ফলে কোন ব্যবসা নেই। দিনে ৪/৫শ’টাকা আয় করতে পারিনা। লোকজন আগের মত আর দা, ছুড়ি, বটি নিয়ে আসেনা এবং অর্ডারও দেয়না। তাই আর কি করব কাজ নেই, ব্যস্ততাও নেই। এ দিকে পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্ট দিন কাটছে।

ফকিরনীর হাটের রতন বলেন, ‘এবার বিক্রি শুরু হবে হয়তো কোরবানির এক সপ্তাহ আগে থেকে। এ বছর তেমন কাজ নেই। তাই পুরোনো ছুরি, বটি, ধামা শাণ দিয়ে রাখছি বিক্রির আশায়।’

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.