রাজস্থলীতে লকডাউনের ষষ্ঠ দিনে বাঙালহালিয়া বাজার ক্রেতাশূণ্য

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

রাজস্থলী প্রতিনিধি: রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার ৩নং বাঙালহালিয়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বাঙ্গালহালিয়া বাজার আজ কঠোর লকডাউনে ছিল অনেকটা ক্রেতা শূন্য।

আজ সাপ্তাহিক বাজার বারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতা ও বিক্রেতা তেমন দেখা যায়নি। আজ ষষ্ঠ দিনের লকডাউন চলেছে। বাজারে এসে দেখা যাচ্ছে, যারা
সপ্তাহে জরুরি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র ক্রয় করতে হাট-বাজারে আসতেন আজকে তারাও আসেননি।
তবে প্রতিদিনের মতো বিক্রেতারা পণ্য নিয়ে হাজির হলেও কাঙ্ক্ষিত ক্রেতার দেখা নেই।

১জুলাই থেকে ১৪ জুলাই একটানা ১৪দিন পর্যন্ত সারাদেশব্যাপী কঠোর লকডাউনের বিধি নিষেধ জাটি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
কারণ বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস রোগ প্রাদুর্ভাব সারাদেশের লাফিয়ে লাফিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই করোনা রোগের মৃত্যু হার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সারাদেশের মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী-পুলিশ-বিজিবি- সেনা বাহিনী-আনসারসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ নিয়োজিত রয়েছেন। অযথা অপ্রয়োজনীয় কাজে যে কোন স্থানের সাধারণ লোক ঘুরাফেরা করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাধ্যমে জেল জরিমানা বিধি-বিধান রয়েছে। তাই অনেকেই ঘর থেকে বের হননি। এতে চন্দ্রঘোনা রাজস্থলী রোড ও বান্দরবান রোডের প্রবেশমুখে সাধারণত কিছু সীমিত আকারে ব্যক্তিগত মোটরবাইক ও অটোরিকশাসহ মালবাহী মিনি ট্রাক বড় ট্রাক চলতে দেখা যায়। আজকের বিভিন্ন প্রবেশপথে চন্দ্রঘোনা থানায় ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী নেতৃত্বে পুলিশ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বাংগালহালিয়া বাজারের অলি-গলিসহ মেইন সড়কে সতর্ক অবস্থায় ছিলেন। যারা বিনা প্রয়োজনে বের হয়েছেন তাদেরকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। সাধারণ লোকদেরকে জিজ্ঞেস করছে, কেন কি কাজে বের হয়েছেন।

পুলিশের সুত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশ বাহিনী সব সময় সাধারণত জনগনের মাঝে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে হ্যান্ড মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাই পুলিশের ভুমিকা অপরিসীম। প্রসঙ্গত, বাজারে ঘুরে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন শাকসবজিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে বলে পাইকারি ব্যবসায়ী সৈকত চাকমা জানান।

তিনি বলেন, লগডাউনের জন্য ক্রেতা ঠিক মত না আসায় কিনা দামে বিক্রি করছি। অন্যান্য খাবার- চা দোকান, ফাস্ট ফুডের দোকান, মুড়ির দোকান, সিমেন্ট, হার্ডওয়ার দোকান,ফার্মেসি, রাইচমিল, ইলেকট্রনিক্স এর দোকান খোলা রয়েছে। একদিকে বর্তমানে পাহাড়ের করোনা সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

রাজস্থলী উপজেলাতে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার গ্রামে ছাইংখ্যইং পাড়া নামক পুরো গ্রামকে লাল চিহ্ন দিয়ে সকর্কতা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। সেখানে ৩৭ পরিবারকে উপজেলা প্রশাসন পক্ষে ইউএনও শেখ ছাদেক আহমেদ সরেজমিনে গিয়ে বিভিন্ন খাদ্যের সামগ্রিক দিয়ে এসেছেন। সে গ্রামে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ।

অন্যদিকে রাজস্থলীতে পাহাড়ের বসবারত বিভিন্ন নৃ- জনগোষ্ঠী সম্প্রদায়রা এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছে। কোন কাজ নেই, তাই আয়ের উৎসও নেই। পাহাড়ের উৎপাদন শস্য বনজ ফলজ জিনিস গুলি ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পারছেনা। করোনা প্রাদুর্ভাব ও লকডাউনের কারণে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপারী ও ক্রেতা না আসায় বিভিন্ন বনজ-ফলজ ফল নস্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানান চিরন মারমা। তিনি বলেন, এখন ক্রেতা শূণ্যে কোথাও গিয়ে বিক্রি করার সুযোগ নেই । পাহাড়ের বেশির ভাগ নৃগোষ্ঠীরা কৃষি উপর নির্ভরশীল। এতেই তাদের পরিবার চলে। সন্তানদের লেখা পড়া, খাওয়া দাওয়া সব কৃষির উপর নির্ভর করছে। বৈশ্বিক করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে কেউ কেউ দুর্গম এলাকায় তিন বেলা খাবার জোগার করতে হিমসিম খাচ্ছেন।

একদিকে করোনা ভাইরাসেরসংক্রমণ বাড়ছে, অন্যদিকে তিন বেলায় খাবার জোগারে সংগ্রাম করতে হচ্ছে তাদেরকে। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.