রাজধানীতে গার্ডার ধসে নিহত আইয়ুব আলী হোসেন রুবেলের লাশ নিতে তার ৫ স্ত্রী হাসপাতাল মর্গের সামনে অবস্থান করছেন। এছাড়াও তার আরও তিন স্ত্রী আছেন বলে জানা গেছে, যাদের মধ্যে ১ জন ইতিমধ্যেই মারা গেছেন, অন্য একজনের বিয়ে হয়েছে অন্যত্র।
সোমবার রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে নিহত হন আইয়ুব আলী হোসেন রুবেল (৫৫) ওতার আরও চারজন স্বজন।
রুবেলের আট স্ত্রীর মধ্যে ৫ স্ত্রী ও আরেক স্ত্রীর এক সন্তান তার মরদেহ দেখতে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যালের মর্গে অবস্থান করছেন। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকাল থেকে মর্গের সামনে একে একে ৫ স্ত্রী এসে রুবেলকে স্বামী হিসেবে দাবি করেছেন।
এরমধ্যে দুর্ঘটনার সময় বেঁচে যাওয়া সন্তান হৃদয় ও সন্তানের নববিবাহিতা স্ত্রী মনি থাকায় তাদের মা রেহানার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে আলোচনায় রয়েছে।
রুবেলের আরেক স্ত্রী মানিকগঞ্জের সাহিদা নিজেকে স্ত্রী দাবি করে মরদেহ তার এলাকায় নিয়ে যেতে চাচ্ছেন। তিনি নিজেকে রুবেলের স্ত্রী দাবি করে অনেক ছবি ও ডকুমেন্টস দেখাচ্ছেন। তার কাছ থেকে রুবেল বিভিন্ন সময় বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়েছেন বলেও দাবি করেন।
রুবেলের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে তার আট স্ত্রীর বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তারা হলেন টিপু আক্তার (মৃত), নারগিস (অন্য জায়গায় পরে বিয়ে হয়ে যায়), রেহানা, সাহিদা, সালমা আক্তার পুতুল, তসলিমা আক্তার লতা, পুষ্পা ও আরেকজনের নাম পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যে মর্গের সামনে রেহানা, সাহিদা, সালমা আক্তার পুতুল, তসলিমা আক্তার লতা ও পুষ্পা উপস্থিত আছেন। নারগিসের মেয়ে নিপাও এসেছেন বাবাকে দেখতে।
নিপা জানান, তার বাবা ও মা অন্যত্র বিয়ে করেছে। তিনি ছোটবেলা থেকেই বঞ্চিত। তবে তিনি বাবার মৃত্যুর খবর শুনে একনজর দেখতে এসেছেন। এছাড়া তার কোনো দাবি নেই বলেও জানান তিনি।
এদিকে, একাধিক স্ত্রী মর্গের সামনে উপস্থিত হওয়ায় মরদেহ নিয়ে যাওয়া এবং পরে অর্থ-সম্পত্তি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন স্বজনরা।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহতদের মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। লাশগুলো থেঁতলে যাওয়া এবং ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হওয়ায় প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে।
প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি
রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার দুর্ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির বিষয়টি উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে সড়ক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার ঘটনার মূল দায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। তারা কাউকে না জানিয়ে কাজ করছিল অথচ গতকাল কাজ বন্ধ থাকার কথা। তাদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, এ ধরনের ব্যাপার ঘটলে তাদের যে দায়, সেই রকম ব্যবস্থাই তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে। এ নিয়ে বিশদভাবে বসবে মন্ত্রণালয় এবং আর কারও কোনো দায় আছে কি না, তা খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।