স্ত্রীকে ভালোবেসে ৩৬৫টি পুকুর খনন রাজার

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

মমতাজের জন্য তাজমহল গড়েছিলেন সম্রাট শাহজাহান। আর স্ত্রীকে ভালোবেসে ৩৬৫টি পুকুর খনন করেছিলেন অষ্টম শতাব্দীর পাল বংশের রাজা চান্দিলাল পাল। চান্দিলালের স্ত্রী হঠাৎ কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। স্ত্রীর প্রতি রাজার ছিল অগাধ ভালোবাসা।

স্ত্রীর রোগ আরোগ্য লাভে তিনি দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠলেন। রাজ দরবারে হেকিম, কবিরাজ ও বৈদ্যদের নিয়ে রাজ দরবারে সভা হয়। হেকিমরা রাজার স্ত্রীকে রোগ থেকে মুক্তি লাভে ৩৬৫টি পুকুর খনন করার পরামর্শ দেন। রানী প্রতিদিন আলাদা পুকুরে স্নান করবেন। এতে রানীর রোগ থেকে মুক্তি মিলবে।

হেকিমদের পরামর্শে রাজা ৩৬৫টি পুকুর খনন করেন। আর প্রতিটি পুকুরে তিন-চারটি সান বাঁধানো ঘাট তৈরি করা হয়। এটা লোককাহিনী হলেও, খনন করা ৩৬৫টি পুকুর এখনো পাশাপাশি ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চক-চান্দিরা গ্রাম। এ গ্রামে প্রায় আট কিলোমিটার বিস্তৃত পাশাপাশি ছোট-বড় ৩৬৫টি পুকুর রয়েছে। এসব পুকুর দেখতে প্রতিদিনই ওই গ্রামে আসছেন দর্শনার্থীরা।

স্থানীয়রা জানান, রাজা তার দুই স্ত্রীর জন্য আলাদা আলাদা পুকুর খনন করে দিয়েছিলেন। যা পরবর্তীতে তা দুই সতীনের পুকুর নামে পরিচিত ছিল। আবার পুকুরে একটি পাথর ছিল, যা একা একা চলাফেরা করত। ফলে পুকুরের নামকরণ করা হয়েছিলো পাথর পকড়া। তবে কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে সেই রাজা, রাজ্য আর রাজপ্রসাদ। কিন্তু কালের সাক্ষী হয়ে আজও রয়েছে পুকুরগুলো। মানুষের মুখে মুখে আজও রয়ে গেছে সেই লোককথা।

জেলা শহর থেকে উত্তরে ধামইরহাট উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। আর ধামইরহাট উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণে ১৬ কিলোমিটার দূরে প্রকৃতি ঘেরা ছায়া সুনিবিড় ঘুকশি নদীর তীরে গ্রাম চক-চান্দিরা। তবে জেলা শহর থেকে বদলগাছী উপজেলা হয়ে উত্তরে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে গ্রামটি। গ্রামে প্রবেশ পথে দেখা যাবে মাটির রাস্তার দু’ধারে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, মাটির ও আধাপাকা বসতবাড়ি। এ গ্রামে বাড়ি রয়েছে ৩৫০টি আর ছোট-বড় পুকুর রয়েছে ৩৬৫টি। পুকুরগুলো পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণে লম্বা। আবার কিছু পুকুর চার কোণাকৃতি। পুকুরপাড়ে বন বিভাগের রয়েছে সবুজ বনায়নও।

চান্দিরা গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, রাজা রানীর এই কাহিনী প্রায় সবার জানা। কালের বির্বতনে কিছু পুকুর ভরাট হয়েছে। আদিকাল থেকে সেগুলো তিনি দেখছেন। তার বাবা- দাদারাও এর পুরো ইতিহাস জানতেন না। তারাও লোকমুখে এই কথাই শুনেছেন।

সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করে এলাকাটিকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.