চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় এক টেম্পো যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। জেলার বোয়ালখালীতে চলন্ত টেম্পো উল্টে গেলে ওই যাত্রীর মৃত্যু হয়। নিহত যাত্রীর নাম মো. সাগর, তার বয়ন ২১ হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানিয়েছে। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকাল ৬টার দিকে বোয়ালখালী থানার আফুল্ল্যার টেক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
উত্তর চট্টগ্রামের এই এক উপজেলাতেই এক বছরের মধ্যে টেম্পো উল্টে ৪ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জনেরও বেশি।
মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে লাশ উদ্ধার করতে যাওয়া পুলিশ জানায়, সাগর বোয়ালখালীর ফুলপাড়া বহদ্দার বাড়ির বাদশাহ মিয়ার ছেলে। দুর্ঘটনার পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির তদারককারী কর্মকর্তা পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান বলেন, বোয়ালখালী আফুল্ল্যার টেক এলাকায় সড়কের খাদে পড়ে একটি টিকটিকি টেম্পো উল্টে যায়। এতে টেম্পো যাত্রী সাগর চাপা পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বারবার টেম্পো উল্টে মৃত্যু, দায় কার
চলতি বছরের ৩ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে পূর্ব কালুরঘাট রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলের সামনে টেম্পো উল্টে মারা যান মো. সেলিম (৫২)। নগরী থেকে টেম্পোতে করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। মো. সেলিম উপজেলার শাকপুরা ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি।
এ ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে ২৫ মার্চ রাত পৌণে ১২টার দিকে উপজেলা গোমদন্ডী ফুলতলে টেম্পো উল্টে প্রাণ হারান নগরীর ফলমন্ডির দোকান কর্মচারী আবদুস সাত্তার (২৯) নামের এক যাত্রী। তিনি পশ্চিম গোমদন্ডী টেঙ্ঘর এলাকার বাসিন্দা। ওই সময় আহত হন আরো ৪ যাত্রী। চাচাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন আবদুস সাত্তারসহ এলাকার লোকজন।
তারও আগে গত বছরের ২০ জুলাই বিকেল ৩টার সময় কালুরঘাট সেতুর নগর প্রান্তে সিএনজি চালিত টেম্পো উল্টে প্রাণ হারান আবু বক্কর (৫০) নামের এক ব্যক্তি। তিনি পোপাদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। প্রবাসী আবু বক্কর মেয়ের শ্বশুর বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। ঘরে থাকা বৃদ্ধ মায়ের জন্য নিয়েছিলেন পান। টেম্পোর নিচে চাপা পড়া আবু বক্করের প্রাণ গেলেও ছাড়েননি হাতে থাকা সেই পানের থলে। সেই সময় আহতও হয়েছিলেন ৫ যাত্রী।
বোয়ালখালীতে বারবার টেম্পো উল্টে প্রাণ হারানোর ঘটনায় উদ্বেগ ও আতঙ্ক বেড়েছে টেম্পো যাত্রীদের মধ্যে। এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রীরা জানান, একটি টেম্পোতে সর্বোচ্চ ১১ জন যাত্রী নেয়ার নিয়ম থাকলেও চালকরা তা অমান্য করে এক গাড়িতেই ১৬ থেকে ১৮ জন পর্যন্ত যাত্রী নেন। ফলে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে টেম্পোগুলো উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে।