নিলামে ১.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি হল নাৎসি স্বৈরশাসক অ্যাডলফ হিটলারের ঘড়ি। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা। মেরিল্যান্ডের আলেকজান্ডার হিস্টোরিক্যাল অকশন নামের একটি নিলাম ঘর থেকে ঘড়িটি রেকর্ড দামে বিক্রি করা হয়েছে। তবে ঘড়িটি কে কিনেছেন তা এখনও জানা যায়নি। বিবিসর এক খবরে এ তথ্য জানা যায়।
আলেকজান্ডার হিস্টোরিক্যাল অকশন ঐতিহাসিক অটোগ্রাফ, নথিপত্র এবং ফটোগ্রাফ, মিলিটারি এবং যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ধ্বংসাবশেষ নিয়ে কাজ করে। তারা বলেছে যে ১৯৩৩ সালের ২০ এপ্রিল ৪৪তম জন্মদিনে ঘড়িটি হিটলারকে সম্ভবত উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ই তিনি জার্মানির চ্যান্সেলর হন।
ঘড়িটি এবং এর ইতিহাস বিশ্বের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও সম্মানিত ঘড়ি নির্মাতা এবং সামরিক ইতিহাসবিদদের দ্বারা গবেষণা করা হয়েছে, যাদের সকলেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে এটি খাঁটি এবং প্রকৃতপক্ষে অ্যাডলফ হিটলারের। জার্মান ঘড়ি সংস্থা হুবার দ্বারা তৈরি ঘড়িটিতে স্বস্তিকার মতো একটি চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও ঘড়িটিতে ইংরেজিতে এএইচ খোদাই করা আছে।
নিলাম ঘরটি আরও বলেছে ১৯৪৫ সালের ৪ মে প্রায় ৩০ জন ফরাসি সেনা হিটলারের অস্থায়ী বাড়ি বার্গোফে হামলা চালিয়েছিল। সেই যুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে ঘড়িটি নেওয়া হয়েছিল। সেনাদলের মধ্যে সার্জেন্ট রবার্ট মিগনোট ছিলেন, যিনি ঘড়িটি নিয়ে ফ্রান্সে ফিরে এসেছিলেন। মিগনোট পরবর্তীকালে এটি এক আত্মীয়কে বিক্রি করেছিলেন। ঘড়িটি মিগনোট পরিবারের একচেটিয়া দখলে ছিল এবং এর আগে কখনও বিক্রির জন্য নিলামে তোলা হয়নি।
যদিও হিটলারের এই ঘড়ি ও অন্য জিনিসপত্র নিলামে তোলা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন ৩৪ জন ইহুদি নেতা। তাঁরা এই নিলামকে ঘৃণ্য বলে বর্ণনা করেছেন এবং নাৎসি আইটেমগুলিকে নিলাম থেকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যার মধ্যে হিটলারের স্ত্রী ইভা ব্রাউনের একটি পোশাক, নাৎসি কর্মকর্তাদের অটোগ্রাফ করা ছবি। যদিও আলেকজান্ডার হিস্টোরিক্যাল অকশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিন্ডি গ্রিনস্টেইন জানিয়েছেন যে নিলামের উদ্দেশ্য ছিল ইতিহাস সংরক্ষণ করা এবং বেশিরভাগ বিক্রি হওয়া আইটেম ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখা হয় বা হলোকাস্ট জাদুঘরে দান করা হয়।
তিনি বলেন, ইতিহাস ভাল হোক বা খারাপ হোক, তা অবশ্যই সংরক্ষণ করা উচিত। যদি আপনি ইতিহাস ধ্বংস করেন, তবে এটা ঘটার কোনও প্রমাণ থাকবে না।