বাংলার তাজমহল স্থাপত্যের এক অনন্য শোভা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

ভারতের আগ্রার তাজমহল সম্পর্কে সবারই কমবেশি জানা রয়েছে। নিশ্চয়ই এটাও জানেন বাংলাদেশেও আছে আগ্রার মতো আরেকটি তাজমহল। যেটি বাংলার তাজমহল নামে পরিচিত। ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত এই স্থাপত্য।

ভারতের তাজমহলের অবিকল এটি। প্রায় ১৮ বিঘা জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে বাংলার তাজমহল। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে এই স্থাপনা। বিদেশি বিভিন্ন উপকরণসহ ১৭২টি ডায়মন্ড ব্যবহার করা হয়েছে।

মহলে ঢুকতে শুরুতেই আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবে ১০টি ঝরনা। আগ্রার তাজমহলের অনুরূপভাবেই তৈরি এই ঝরনা। আশেপাশে যেদিকেই চোখ যাবে, সবটাই রয়েছে ফুলে সুসজ্জিত। এই মনোমুগ্ধকর পরিবেশে বসে নিরিবিলি সময় কাটানোর পাশাপাশি মনোমুগ্ধ হয়ে উপভোগ করতে পারবেন তাজমহলের সৌন্দর্য।

মূল্যবান সব পাথর দিয়ে সাজানো হয়েছে বাংলার তাজমহলের ভেতরটি। বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে দামিসব চকচকে টাইলস। এই তাজমহলেও আগ্রার মতোই চার কোণে চারটি বড় বড় মিনার রয়েছে।

মহলের ভেতরে আছে রাজমনি ফিল্ম সিটি স্টুডিও। সেখানে নাটক, সিনেমার শুটিং করা হয়। আরো আছে ২৫০ আসন বিশিষ্ট সিনেমা হল ও সেমিনার কক্ষ। আর তাজমহলের বাইরেও আছে রাজমনি ফিল্ম সিটি রেস্তোরা, খাবারের ছোট-বড় দোকান, আবাসিক হোটেল, হস্তশিল্পের দোকান এবং জামদানি শাড়ি।

চলচ্চিত্র নির্মাতা আহসানুল্লাহ মনি ২০০৮ সালে বাংলার তাজমহলটি নির্মাণ করেন। ডিসেম্বর মাসে সেটি উদ্বোধন করা হয়। এই প্রকল্পটির জন্য তখনকার সময় ব্যয় হয়েছিলো প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

তাজমহলটি কেন নির্মাণ করেছিলেন সে বিষয়ে তিনি জানান, এ দেশের দরিদ্র মানুষ যারা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সামর্থ্য না থাকায় ভারতে গিয়ে তাজমহল দেখতে পারেন না, তাদের স্বপ্ন পূরণ করতেই বাংলার এই তাজমহলটি নির্মাণ করা হয়েছে।

১৯৮০ সালে আগ্রার তাজমহল দেখে বিস্মিত হয়ে তখনই এর অবিকল প্রতিরূপ নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন আহসানুল্লাহ মনি। এরপর ২০০৩ সালে এটির নির্মাণকাজ শুরু করেন। এরপর নির্মাণকাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য ৬ বার আগ্রার তাজমহল পরিদর্শন করেন তিনি।

বাংলার তাজমহল তৈরি করতে সময় লেগেছে ২০ বছর। ২২ হাজার শ্রমিকের প্রচেষ্টায় অবশেষে সমাপ্ত হয় এটি। প্রথমদিকে তাজমহলের এই অবিকল প্রতিরূপ সৃষ্টির ঘটনায় ভারত ক্ষুব্ধ হয়। বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস থেকে জানানো হয়, আহসানুল্লাহ মনিকে প্রকৃত তাজমহলের মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন করার দায়ে অভিযুক্ত করা হবে।

আহসানুল্লাহ মনি ও তার স্ত্রী রাজিয়া দু’জনেরই কবর দেওয়া হয় এই তাজমহলে। সবসময়ই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে বাংলার তাজমহলে। বর্তমানে সেখানে সুইমিংপুল ও আইফেল টাওয়ারের প্রতিরূপ তৈরির কাজ চলছে। এই তাজমহলের অবস্থান চেনার জন্য মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে নির্দেশনার সাইনবোর্ড।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে কুমিল্লাগামী যেকোনো গাড়িতে চড়ে মদনপুর বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে। সেখান থেকে সিএনজি বা স্কুটারে জনপ্রতি ২৫-৩০ টাকায় যাওয়া যায় তাজমহলে। প্রতিদিন সকাল ১০-৬টা পর্যন্ত খেলা থাকে বাংলার তাজমহল। সেখানে প্রবেশ ফি ১৫০ টাকা।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.